প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

আইপিও ফান্ডের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার হয়েছে ২০২২ সালে

আনিসুর রহমান সুমন
২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:২০:৫৩ | আপডেট: ২ years আগে
আইপিও ফান্ডের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার হয়েছে ২০২২ সালে

২০২২ সালে দেশের পুঁজিবাজার থেকে ৯ টি কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ১ হাজার ৮৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। কিন্তু কোম্পানিগুলো তাদের উত্তোলিত এ অর্থের মাত্র ১০.১৩ শতাংশ ব্যবহার করেছে।

গত অর্থবছরে, ১৯ টি কোম্পানি তাদের আইপিও তহবিলের ৫৬.৫ শতাংশ কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণে বিনিয়োগ করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) কোম্পানিগুলি ২০২২ সালে নতুন মূলধন সংগ্রহ করেছে, কিন্তু এই তহবিলের বেশিরভাগই সম্প্রসারণের জন্য ব্যবহার করেনি। যা অর্থনীতির জন্য একটি খারাপ প্রবণতা।

ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজের তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালে নয়টি কোম্পানি ১ হাজার ৮৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। এর মধ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য মাত্র ১১০.৩ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ অর্থের মধ্যে ১৪৯.৯ কোটি টাকা বা ১৩.৭৭ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে ৭৪১.৭ কোটি টাকা বা মোট তহবিলের ৬৯.০৯ শতাংশ এসএমই, প্রকল্প অর্থায়ন, ফিক্সড ডিপোজিট রসিদ (এফডিআর), ট্রেজারি বন্ড এবং সরকারী সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা হয়েছিল।

কোম্পানিগুলোর আইপিও প্রসপেক্টাস অনুযায়ী অবশিষ্ট তহবিল ব্যাঙ্ক ঋণ এবং আইপিও খরচ পরিশোধের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।

২০২১ সালে ২০টি কোম্পানি ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছ, যা গত ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২০ সালে আটটি আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৯৮৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, আইপিও তহবিলগুলি সাধারণত বাজারে নগদ প্রবাহ বাড়ায়, নতুন চাকরি তৈরি এবং অর্থনীতিতে গতি আনে।

কোম্পানিগুলোর আইপিও প্রসপেক্টাস অনুসারে, তহবিলের একটি ছোট অংশ বিদ্যমান সক্ষমতা বাড়ানো বা নতুন ইউনিট স্থাপনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।

বাকি তহবিল পুঁজিবাজার, এসএমই, প্রজেক্ট ফাইন্যান্স, এফআরডি, ট্রেজারি বন্ড, সরকারি সিকিউরিটিজ, ঋণ পরিশোধ এবং আইপিও খরচ বহনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিধি মোতাবেক- আইপিও থেকে উত্তোলিত অর্থের এক-তৃতীয়াংশের বেশি ঋণ পরিশোধ বা কার্যকরী মূলধন হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না।

২০২২ সালে, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যাল এবং জেএমআই হাসপাতাল বুক বিল্ডিং পদ্ধতির অধীনে ৭৫ কোটি টাকা করে সংগ্রহ করেছে।

এদিকে ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স ১৯.৪ কোটি টাকা, বিডি থাই ফুড ১৫ কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংক ৪২৮ কোটি টাকা, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ১৫ কোটি টাকা, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১৫ কোটি টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ৪২৫ কোটি টাকা এবং ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স ২০ কোটি ২৬ লাখ টাকা উত্তোলন করে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, “শিল্পায়নের জন্য পুঁজিবাজার একটি বড় উৎস। এটি আরও কর্মসংস্থান তৈরি করবে, এবং মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করবে।"

তিনি আরও বলেন, “কিছু বহুজাতিক কোম্পানি আমাদের দেশে ব্যবসা করছে, কিন্তু তারা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়। কিন্তু তারা প্রতিবেশী দেশগুলির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। আমাদের পুঁজিবাজারের স্বার্থে তাদের কর মওকুফের প্রস্তাব দেওয়া উচিত।"