প্রযুক্তিগত দুর্বলতার কারণে বিগত কয়েক বছরে বারবার সাময়িক সময়ের জন্য লেনদেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। ট্রেডিং সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটির কারণে ডিএসইতে সোমবারও লেনদেন বন্ধ হয়ে ছিলো।
অন্যান্য দিনের মতো আজও সকাল সাড়ে ৯টায় দিনের স্বাভাবিক লেনদেন শুরু হয়েছিল। তবে ১০টা ৫৮ মিনিট থেকে কারিগরি ত্রুটির কারণে লেনদেন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। পরে বেলা ২ টা ১০ মিনেটে পুনরায় লেনদেন শুরু হয়ে ২ টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত চলে। বাকি ৫ মিনিট ছিল পোস্ট ক্লোজিং সেশন।
সোমবার সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময়ে লেনদেনের সাথে ডিএসইর ওয়েবসাইট আপডেটও বন্ধ ছিল। তবে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন স্বাভাবিক ছিল।
গত বছরের ১৮ জুলাইও লেনদেনের মাঝে কারগরি ত্রুটির কারণে লেনদেন বন্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল ডিএসইতে। ওইদিন সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর ১ ঘণ্টা ৯ মিনিট পর বেলা ১১টা ৯ মিনিটে লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। ত্রুটি সারিয়ে ওইদিন ফের লেনদেন শুরু হয় দুপুর ১টায়। এদিন লেনদেনের সময়সীমা বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
এ ধরনের সমস্যা অবশ্য নতুন কিছু নয়। আগেও বারবার ডিএসইতে কারিগরি ত্রুটি দেখা গেছে।
ডিএসই'র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, সাময়িক সময়ের জন্য কারিগরি ত্রুটির কারণে আজ ডিএসইতে লেনদেন বন্ধ ছিল। তবে কালকে যথাসময়ে লেনদেন শুরু হবে। কারিগরি ত্রুটির কারণ কি জানতে চাইলে তিনি তা জানাতে পারেনি নি।
এ ব্যাপারে রশিদ ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ রশিদ লালী দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, আজকে কারিগরি ত্রুটি কি কারণে হলো এ ব্যাপারে ডিএসই এখনো আমাদের কিছুই জানায় নি। তিনি আরো বলেন আজকে ডিএসইতে লেনদেন বন্ধের সময়টাতে লেনদেন হয়েছিল মাত্র ২২৮ কোটি টাকার। এ ট্রেডিং সফটওয়্যার দিয়ে ডিএসইতে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ওপরে লেনদেনও হয়েছিল । এ সামান্য পরিমাণ লেনদেনের ফলে তো ডিএসইর ট্রেডিং সিস্টেমে চাপ পড়ার কথা না। তবে এ ধরনের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে না ঘটে সে জন্য দ্রুততম সময়ে কারণটা বের করা উচিত।
এ ব্যাপারে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, আজকের লেনদেন বন্ধের কারণ এখনো অজানা। ট্রেডিং সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটির কারণ অনুসন্ধানে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও)কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন আশা করা যায় অচিরেই এর কারণ জানা যাবে এবং এর সমাধান হবে।
ডিএসইতে কারিগরি ত্রুটি
২০২০ সালের ডিএসই ১৮ আগস্ট ডিএসই ওয়েবসাইটের আপডেটেড ভার্সন সচল করার পর শেষ সেশনে বড় ঝামেলা পোহাতে হয় বিনিয়োগকারীদের। সে অবস্থা দুদিন ছিল।
২০১৫ সালের ২৪ মে ডিএসই সার্ভারে কারিগরি ত্রুটির কারণে লেনদেন তিন ঘণ্টা ৫০ মিনিট বন্ধ থাকে।
২০১৩ সালে জানুয়ারিতে ওএমএস প্লাসের জটিলতার কারণে লেনদেনের শুরুতে ব্রোকারেজ হাউসগুলো মূল সার্ভারে লগ-ইন করতে পারেনি।
২০১২ সালে ডিএসইর সার্ভারের কারিগরি ক্রটির কারণে লেনদেন শুরু হয় এক ঘণ্টা পর। এর আগে ২০১০ সালে দুইবার এমন কারিগরি ক্রটির মুখে পড়ে ডিএসই।