মিরাজ শামস
সময়মতো পণ্য সরবরাহ আর দায় পরিশোধ না করাসহ গ্রাহক ও পণ্য সরবরাহকারীদের নানা অভিযোগে অভিযুক্ত বিতর্কিত ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির আর্থিক হিসাব যথাযথভাবে যাচাইয়ে আরও একটি পৃথক অডিট করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিতর্কিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মটির আর্থিক তথ্য চেয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপরই এ নির্দেশনা দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এছাড়া আজ এক বৈঠকে ইভ্যালির দেয়া জবাব পর্যালোচনা করবে গত ৩ আগস্ট গঠিত ৯ সদস্যের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি। এতে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে, সে বিষয়েও নেয়া হবে সিদ্ধান্ত।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির দেয়া আর্থিক বিবরণীতে অসঙ্গতি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারণেই পৃথক অডিট করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কীভাবে ক্রেতা ও সরবরাহকারীদের দায় শোধ করবে, সেটিই এখন ইভ্যালির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আজকের বৈঠকে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়।
বৈঠকে অংশ নেবেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে ওই আন্তঃমন্ত্রণায় কমিটি গঠিত হয়।
কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন, বাংলাদেশ কম্পিটিশন কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগের প্রতিনিধিরা।
কোম্পানি আইন নিয়ে কাজ করা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিব-উল-আলম বলেন, আজকের বৈঠকের আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে ইভ্যালির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া। সেইসাথে অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নিয়েও আলোচনা।
এ প্রসঙ্গে কমিটির চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, ইভ্যালিসহ বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের আর্থিক তথ্য চেয়ে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। ওই চিঠির জবাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদেরকে ইভ্যালির আর্থিক বিবরণী অডিট করতে বলেছে।
যখন অডিট করার কথা আসে, তখন মন্ত্রণালয়কে এ কার্যক্রমের আর্থিক খরচের মতো বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করতে হয়, তবে বৈঠকে সবকিছু নিয়ে আলোচনা করার পর আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান হাফিজুর রহমান।
কমিটির সভাপতি মনে করেন, ইভ্যালিসহ অর্থ হাতিয়ে নেয়া অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারিত হবে এ বৈঠকে।
ক্রেতা, সরবরাহকারী আর কোম্পানি, প্রত্যেকের স্বার্থই যাতে নিশ্চিত হয়, সেজন্যই আমরা একটি সঠিক সমাধান নিয়ে আলোচনা করবো, বলেন হাফিজুর।
ইভ্যালি বলছে, যদি সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে, তবে আগামী ৫ মাসের মধ্যেই দায় পরিশোধ করা সম্ভব হবে।
তবে ইভালির উল্লেখিত ‘যদি’ শব্দ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন হাফিজুর রহমান।
কমিটির চেয়ারম্যান বলছেন, বর্তমান সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে ইভ্যালির কাছ থেকে ক্রেতারা কিভাবে আত্মবিশ্বাসের সাথে পণ্য ক্রয় করবে এবং কিভাবে ই-ট্রেডার তার আয়ের সাথে দায় পরিশোধ করবে, সে প্রশ্নই এখন দেখা দিয়েছে।