প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

এলডিসি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় রাজস্ব ও শুল্ক কাঠামোর সংস্কার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৬ অক্টোবর ২০২২ ১৬:৫১:২৭ | আপডেট: ২ years আগে
এলডিসি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় রাজস্ব ও শুল্ক কাঠামোর সংস্কার দাবি

এলডিসি উত্তোরণের পর পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা হারাবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।

তিনি বলেন, দেশে উৎপাদিত পণ্য বহির্বিশ্বে রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রায় ৮%-১৬% শুল্ক প্রদান করতে হবে, যা দেশের রপ্তানি সক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করবে। এলডিসি উত্তোরণের এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশের রাজস্ব ও শুল্ক কাঠামোর আমূল সংস্কার প্রয়োজন।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) ডিসিসিআই আয়োজিত ‘প্রতিযোগিতামূলক শুল্ক কাঠামো : প্রেক্ষিত স্বল্পোন্নত দেশের উত্তরণ’ শীর্ষক ওয়ার্কশপে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, এলডিসি উত্তোরণের পর নীতিমালা সহজীকরণ, দক্ষতা উন্নয়ন, বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলোর সাথে পিটিএ এবং এফটিএ স্বাক্ষরের পাশাপাশি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সংস্থাগুলোতে নিজেদের অন্তর্ভুক্তি অপরিহার্য।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষায় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বর্তমানে চলমান নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কাঠামোতে উল্লেখজনক হারে পরিবর্তন করতে হবে। একইসঙ্গে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পণ্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে ভ্যালু এডিশন নিশ্চিতেরও কোনো বিকল্প নেই।

ওয়ার্কশপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের যুগ্ম প্রধান মো. মশিউল ইসলাম।আরও উপস্থিত ছিলেন- ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শীষ হায়দার চৌধুরী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (ডব্লিউটিও সেল, পরিচালক-৩) ফারহানা আইরিছ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)’র প্রথম সচিব (শুল্ক রেয়াত ও প্রকল্প সুবিধা) ড. মো. নিয়োমুল ইসলাম।

মো. মশিউল ইসলাম বলেন, গত অর্থবছর বাংলাদেশ ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং সর্বোচ্চ রপ্তানিকৃত ২০ পণ্যের মধ্যে ১৮টিই শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা ভোগ করেছে। এলডিসি উত্তোরণের পর উদ্যোক্তারা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।

এ অবস্থায় বৈশ্বিক বাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বেসরকারি খাতের দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়াতে এখনই কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি।

একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণ ও স্থানীয় শিল্পায়নকে আরও গতিশীল করতে দেশের সার্বিক রাজস্ব ও শুল্ক কাঠামো সংস্কারের উপর জোরারোপ করেন তিনি।

এছাড়াও পরিবর্তিত বৈশ্বিক বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ‘ন্যাশনাল ট্যারিফ পলিসি’ প্রণয়নের প্রয়োজন রয়েছে বলেও মত দেন মশিউল ইসলাম।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, কোভিড মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা দেশের এলডিসি উত্তোরণের পরিস্থিতিতে জটিল করেছে। এ সমস্যা সমাধানে বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলোর সাথে এফটিএ এবং পিটিএ স্বাক্ষরের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বেশকিছু গবেষণা পরিচালনা করেছে সরকার।

বাস্তবভিত্তিক শুল্ক কাঠামো প্রণয়নে দেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের জিডিপিতে করের অবদান মাত্র ৭.৯%, যা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এলডিসি উত্তোরণের পর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকারকে আরো অধিক হারে ভ্যাট ও কর আহরণের উপর নজর দিতে হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ফারহানা আইরিছ বলেন, আমাদের রপ্তানি ও আমদানির মধ্যে বিশাল ঘাটতি রয়েছে। এ অবস্থায় শুল্ক কাঠামো সহজীকরণের পাশাপাশি আমাদেরকে রপ্তানির পরিমাণ বাড়ানো ও পণ্য বহুমুখীকরণের উপর নজর দিতে হবে।