প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

কমলো যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পোশাকের দাম

০৩ অক্টোবর ২০২১ ১৬:০৭:৫২ | আপডেট: ৩ years আগে
কমলো যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পোশাকের দাম

ইব্রাহিম হুসাইন অভি

করোনায় পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় আগস্ট মাসে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পোশাকের দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ শতাংশ কমেছে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৮.০৪ শতাংশ পোশাক রপ্তানি হয়।

২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের জুন এবং জুলাই মাসে বাংলাদেশের পোশাকের মূল্য যথাক্রমে ২.৪৬ শতাংশ এবং ০.০৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু আগস্ট মাসে রপ্তানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে ১৭.৯২ শতাংশ কমে যায় পোশাকের দাম। যা এ যাবতকালের সবচেয়ে বেশি। 

অফিস অফ টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল এর তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩.৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। যা এক বছর আগের একই সময়ে ২.৯০ বিলিয়ন ডলার ছিল।

বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট শহীদুল্লাহ আজিম দ্য বিজনেস পোস্ট'কে বলেন, করোনা কারণে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার অতিরিক্ত চার্জের জন্য মার্কিন ব্র্যান্ড আর খুচরা বিক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পোশাকের দাম কমিয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অর্ডার থাকলেও উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম কম।

বিজিএমইএ’র পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, ক্রেতাদের মালামাল পরিবহন করতে গিয়ে করোনার কারণে ১২ হাজার ডলার থেকে ৩০ হাজার ডলার খরচ হয়।

বিজিএমইএ'র সভাপতি ফারুক হাসান বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, চলমান কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও আমরা সাপ্লাই চেইনকে দীর্ঘস্থায়ী এবং শ্রমিকদের কাজে লাগাতে পদক্ষেপের পাশাপাশি বিনিয়োগ করছি।

তিনি বলেন, এমন বাস্তবতায় মার্কিন বাজারে রপ্তানি করা পোশাকের দাম ৮.০৪ শতাংশ কমানোর কারণে ক্রেতাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

অন্যদিকে, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে রপ্তানিকারকরা অনেক কাজের অর্ডার বাতিলের মুখোমুখি হন। 

বিএমইএ সভাপতি বলেন, যেহেতু আমরা কোভিড-১৯ মহামারি থেকে সেরে উঠছি, তাই ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতাদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের মূল্য আদায়ে বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া জরুরি। 

তিনি আরও বলেন, উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি করা সরবরাহকারী এবং আমদানিকারক উভয়ের জন্যই ভালো হবে না; বরং এটি সরবরাহ শৃঙ্খলাকে অস্থিতিশীল করবে।

প্রস্তুতকারকদের মূল্য নিয়ে আলোচনায় আরও সতর্ক হতে এবং পণ্য বৈচিত্র্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে বলেও মনে করেন ফারুক হাসান।

এদিকে, যদি প্রত্যাশিত দামের সাথে ক্রেতাদের দাম না মেলে, তাহলে তাদের ‘না’ বলে দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম দ্য বিজনেস পোস্ট'কে বলেন, কাঁচামালের দাম বেড়েছে, অথচ ক্রেতারা কম দাম দিচ্ছেন। সুতরাং চলমান সংকটের মধ্যে দাম কমানো ঠিক হবে না। 

তিনি বলেন, রপ্তানিকারকরা পোশাকের দাম কমান অনেক সময়, কারণ তারা অর্ডার পেতে কখনও কখনও দামের সাথে আপোষ করে। যতক্ষণ প্রত্যাশিত দাম না পাওয়া যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত রপ্তানিকারকদের দাম নেয়া উচিত নয়।

দাম নির্ধারণে আলোচনায় আরও দক্ষতা দেখানো এবং পণ্য তৈরিতে বৈচিত্র্যের দিকে আরও নজর দেয়ার পরামর্শ দেন খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।