নানা জটিলতায় রাজধানীর উত্তর কমলাপুর থেকে উত্তরার আজমপুর এলাকায় কারখানা স্থানান্তর করেছে এনভয় গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ওলিও এ্যাপারেলস্ লিঃ। একইসঙ্গে সকল কর্মীদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিও করেছে কোম্পানিটি।
সোমবার বকেয়াদি পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনভয় গ্রুপের মানব সম্পদ বিভাগ প্রধান এ.কে.এম. সিদ্দিকুর রহমান।
তিনি বলেন, বিজিএমইএ কমপ্লেক্স থেকে রোববার সকল মজুরী ও ওভার টাইমসহ শ্রম আইন মোতাবেক কর্মীদের সকল বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে।
এদিকে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে কারখানা উত্তর কমলাপুর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে উত্তরা আজমপুরে স্থানান্তর করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের সকল পাওনাদি পরিশোধ করা হয়েছে। স্থানান্তরিত ঠিকানায় যদি কোন শ্রমিক পুনরায় চাকুরি করতে ইচ্ছুক হয় তাহলে তারা নতুনভাবে চাকুরিতে যোগদান করতে পারবেন।
কোন শ্রমিকের নামে মামলা, পুলিশী হয়রানি ও ইন্টারনেটে কোনো ছবি দেয়া হবে না বলেও কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ১ নভেম্বর বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে এনভয় গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ওলিও এ্যাপারেলস্ লিঃ কর্মীরা।
এরপর রোববার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিজিএমইএ জানিয়েছে, এনভয় গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ওলিও এ্যাপারেলস্ লিঃ শ্রমিকদের অক্টোবরের বেতন পরিশোধ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এনভয় গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ওলিও এ্যাপারেলস্ লিঃ, কেআরসি ভবন, ১/১ উত্তর কমলাপুর, ঢাকা-১০০০ এ ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে একটি ভাড়া চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে এই ভবনে শতভাগ রপ্তানিমূখী তৈরি পোশাক কারখানা স্থাপন করে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়। দীর্ঘ ১৬ বছরের পথ চলায় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দেশের প্রচলিত আইন, বিদেশি ক্রেতারদের চাহিদা এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠন আরএসসি (আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিল) কর্তৃক নির্ধারিত মানের বৈদ্যুতিক, অগ্নি ও ভবনের কাঠামোগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে আরএসসি (আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিল) এর পর্যালোচনায় অগ্নি নিরাপত্তার জন্য ভূগর্ভস্থ জলাধারের অপর্যাপ্ততা ও ভবনের কিছু অংশের কাঠামোগত দুর্বলতা/ত্রুটি চিহ্নিত করেন। যা নিরসনে আবারো বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে এই ভবনটিতে নতুন করে ভূগর্ভস্থ জলাধার নির্মাণ ও কারখানা ভবনটির কাঠামোগত ত্রুটি মেরামতের কাজ করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ উপরন্তু এ ব্যাপারে ভবন মালিকের সুস্পষ্ট আপত্তি/অসম্মতি থাকায় আরএসসি (আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিল) এর চাহিদা মাফিক কমপ্লায়েন্স উপযোগী করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলশ্রুতিতে, এই ভবনে উৎপাদন পরিচালনার ক্ষেত্রে অবধারিত ভাবেই বিদেশি ক্রেতারা তাদের চলমান ও ভবিষ্যৎ সকল ক্রয়াদেশ ১ নভেম্বর তারিখ হতে স্থগিত/বাতিল করেছেন এবং আরএসসি (আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিল) উৎপাদন পরিচালনার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞ আরোপ করেছে। বিধায়, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের পক্ষে এই ভবনে কারখানাটি আর পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না, যা প্রচলিত শ্রম আইনের ২৮(ক) ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত।
ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা-২৮(ক) এবং তদীয় শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ এর বিধি-৩২(খ)(অ)(১) অনুযায়ী বর্তমান স্থাপনা হতে মাত্র ২২ কিঃমিঃ দূরত্বে সিমকো কমপ্লেক্স, ৪৩, চালাবন, শাহ কবির মাজার রোড, আজমপুর, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ ঠিকানায় চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।