মিরাজ শামস
পণ্যের বিপরীতে গ্রাহকদের পরিশোধ করা টাকা আড়াই মাস ধরে আটকে আছে একটি পেমেন্ট গেটওয়ে কোম্পানিতে। সেই টাকা ছাড় করার পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম কিউকমের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠির প্রেক্ষিতে এ পরামর্শ এসেছে। ওই আবেদনে আটকে থাকা টাকা ছাড়ের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ চায় প্রতিষ্ঠানটি।
চিঠিতে কিউকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিপন মিয়া বলেন, কিউকমের পেমেন্ট গেটওয়ে পরিষেবা প্রদানকারী ফস্টার পেমেন্টসে আটকে আছে ৪৪০ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, আমরা পেমেন্ট গেটওয়ে কোম্পানির কাছে চালান জমা দিয়েছি। কিন্তু তারা টাকা পরিশোধ করছে না। কোম্পানি কয়েকজন গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ করেছে। আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও, গেটওয়েটি অর্থ ছাড় করছে না। তহবিল আটকে থাকায় আমরা গ্রাহকদের সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে পারি না।
কিউকমের মতো, আরও কিছু অনলাইন শিপিং প্ল্যাটফর্মও সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে অনুরূপ অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগে বলা হয়, তারা পণ্য সরবরাহ করার পরও গেটওয়ে থেকে টাকা পাচ্ছে না।
পেমেন্ট গেটওয়ে হল এমন একটি প্রযুক্তি, যা ব্যবসায়িরা ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অথবা মোবাইলের মাধ্যমে টাকা দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে পেমেন্ট গ্রহণ করতে ব্যবহার করে।
পেমেন্ট গেটওয়ে গ্রাহক এবং পরিষেবা বা পণ্য সরবরাহকারীদের মধ্যে অর্থ প্রদানের ছাড়পত্র বা অন্যান্য লেনদেনের জন্য মাধ্যম হিসাবে কাজ করে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা পেমেন্ট নিশ্চিত করতে আইনিভাবে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছি। বিষয়টির সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি লিখেছে।
কিছু ই-কমার্স কোম্পানি যেমন- ইভ্যালি এবং ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে পণ্য সরবরাহ এবং সরবরাহকারীদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থতায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ আসে। এরপর গত জুলাইয়ের শুরুতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নির্দেশিকা জারি করে।
গ্রাহকরা তাদের কেনা পণ্য হাতে না পাওয়া পর্যন্ত পণ্যের দাম দেশীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো পাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়। পণ্য হাতে পেলে তখনই কেবল টাকা পাবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো।
বেশ কয়েকটি ডিজিটাল কমার্স প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান অভিযোগের পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কারণ, এমন অভিযোগ আসছিল যে, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রহকের অর্ডার করা পণ্য সময়মত সরবরাহ করছিল না, এছাড়া আগাম অর্থ প্রদানের বিপরীতে পণ্য ডেলিভারিতেও তারা অনেক দেরি করছিল।