ডিমের দাম নিয়ে সাধারণ ভোক্তার ভোগান্তি যেন শেষ হচ্ছে না। পাইকারিতে ডিমের দাম কমলেও খুচরা বাজারে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। খামারে ডিম ১০ টাকা প্রতি পিস বিক্রি করা হলেও খুচরা বাজারে তা প্রায় ১৪ টাকায় গিয়ে ঠেকে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে সাধারণ মানের ফার্মের লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ১২.৫০ টাকা থেকে ১৩.৭৫ টাকা।
সরকারি ট্রেডিং কটোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির বাজার তথ্যও একই কথা বলছেন। টিসিবির বুধবারের বাজার তথ্যে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা।
বুধবার রাজধানীর বড় পাইকারি বাজার তেজগাও ও কাপ্তান বাজারে পাইকারিতে প্রতি ১০০ ডিম বিক্রি হয় ১০৩০ টাকা থেকে ১০৫০ টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি ডিম বিক্রি হয় ১০.৩০ টাকা থেকে ১০.৫০ টাকা। বুধবার যে ডিম বিক্রি হয়েছে তা বিভিন্ন খামার থেকে তারা প্রতি ১০০ ডিম ১০০০-১০১০ টাকা বা প্রতিটি ১০-১০.১০ টাকায় কিনেছেন। সে হিসেবে প্রতিটি ডিমের দাম ১০ টাকা।
তবে খুচরা বাজারে দাম বেশি রাখাটা অযৌক্তিক বলেই মনে করেন পাইকাররা।
কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খুচরা বাজারে দাম একবার বাড়লে তারা সেটাই অনেক দিন ধরে রাখার চেষ্টা করে। আগের লোকসান পুষিয়ে নেয়া ও ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেশি হওয়ায় অনেকেই হয়তো বেশি দামে বিক্রি করে।
রাজধানীর তেজগাঁয়ের পাইকারি ডিমের ব্যবসায়ী মুন্সিগঞ্জ ডিমের আড়তের সত্ত্বাধিকারী মঞ্জুর হোসেন বলেন, ডিমের দাম গত কয়েক দিনের তুলনায় অনেকটাই কমেছে, সামনের দিনগুলোতে আরো কমবে। গত তিন দিনে ডিমের দাম প্রতিটিতে প্রায় দেড় টাকা কমেছে। আমরা গত সোমবার প্রতি ১০০ ডিম বিক্রি করেছি ১১৭০ টাকা বা প্রতিটি ১১.৭০ টাকায়। মঙ্গলবার বিক্রি করেছি ১০.৮০ টাকায়, আর বুধবার বিক্রি করেছি ১০.৩০ টাকায়।
খামারি, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে খামার থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত আসতে প্রতি ১০০ ডিমের দাম বাড়ছে ৩৭৫ টাকা পর্যন্ত, যার মধ্যে ৩৪০ টাকাই বাড়ছে খুচরা পর্যায়ে।
পোল্ট্রি রক্ষা জাতীয় পরিষদের তথ্য অনুসারে, গত সোমবার গাজীপুরসহ বিভিন্ন খামারে সাধারণ মানের ফার্মের লাল প্রতিটি ডিম বিক্রি হয়েছিল ১০.৯০ টাকায়। মঙ্গলবার দাম কমে ১০.৫০ টাকায় নেমে আসে। সর্বশেষ বুধবার প্রতিটি ডিম বিক্রি হয়েছে ১০.১০ টাকা করে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকে কিনে ভোক্তা পর্যন্ত দুই হাত বদল হয়। আর খামার থেকে ভোক্তা পর্যন্ত ডিম পৌঁছতে বদল হয় ৪ হাত। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন খামার বা ডিলারের কাছ থেকে সরাসরি ডিম কিনে আনেন। পাইকারি বাজার থেকে ডিম কিনে ছোট ভ্যানে করে তা সরবরাকারীরা বিক্রি করেন বাজার বা পাড়া মহল্লার বড় দোকানগুলোতে।