প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতে প্রাথমিক জ্বালানি উৎসে আরও বিনিয়োগের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ মে ২০২৩ ১৮:৫০:২৮ | আপডেট: ২ years আগে
গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতে প্রাথমিক জ্বালানি উৎসে আরও বিনিয়োগের আহ্বান

নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রাখতে প্রাথমিক জ্বালানি উৎসে আমাদের আরও বেশি বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে এবং রাষ্ট্রায়িত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এগুলোর সংষ্কার একান্ত অপরিহার্য। সেই সাথে ভবিষ্যতে জ্বালানি চাহিদা এবং সরবরাহের ভিত্তিতে ‘পাওয়ার সেক্টর মাষ্টারপ্ল্যান’ পুণঃসংশোধনের আহ্বান জানান ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার।

শনিবার ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘জ্বালানি নিরাপত্তা; ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা’ বিষয়ক স্টেকহোল্ডার ডায়ালগ অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, এমপি এবং এফবিসিসিআই’র প্রাক্তন সভাপতি জনাব মোঃ শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন), এমপি উক্ত অনুষ্ঠানে যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার অস্থিতিশীল বৈশ্বিক ভূ-অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সময়কালে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে জ্বালানি নিরাপত্তা অন্যতম পূর্বশর্ত।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে এবং এ লক্ষ্য পূরণে সরকার সকল শিল্পখাতে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সংযোগ অব্যাহত রাখতে ইতোমধ্যে পরিকল্পনা করছে এবং কার্যকরভাবে তা বাস্তবায়ন করছে।

তিনি বলেন, অপরিকল্পিত শিল্পায়নের কারণে সরকারের পক্ষে গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না, তাই গ্যাস-বিদ্যুৎ সহ অন্যান্য সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে তিনি উদ্যোক্তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে শিল্প-কারখানা স্থাপন ও স্থানান্তরে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাস করা হবে এবং এ খাতে সরকার ভর্তুকি হ্রাসের পরিকল্পনা নিয়েছে এবং সরকার ইতোমধ্যে একটি ‘মূল্য নীতিমালা’ প্রণয়ন করেছে বলে অবহিত করেন তিনি।

তিনি বলেন, গ্যাস অনুসন্ধানের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রচুর সময় ও বিপুল পরিমানে বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও অনুসন্ধান কার্যকক্রম অব্যাহত রাখার কোন বিকল্প নেই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে এবং এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এছাড়াও জ্বালানি ব্যয় হ্রাসের লক্ষ্যে শিল্পখাতকে সক্ষমতার সাথে জ্বালানি ব্যবহারের আহ্বান জানান।

এফবিসিসিআই’র প্রাক্তন সভাপতি মোঃ শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন), এমপি বলেন, করোনা মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা পৃথিবীতে জ্বালানি প্রাপ্তিতে স্বল্পতা এবং সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় বিশ্বব্যাপী জ্বালানির মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলে স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে এব সেই সাথে বেড়েছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি।

তিনি বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশের শিল্পখাতে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে সরকারকে আরও কৌশলী হওয়া ও সংশ্লিষ্ট সরকারী সংস্থাগুলোকে আরো উদ্যোগ হওয়া আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, সরকার গৃহীত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে এখনও গ্যাস-বিদুৎ, পরিবহন সহ অন্যান্য সেবার শতভাগ নিশ্চিত করা যায়নি এবং বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল সমূহে সকল সেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান, যেটি আমাদের উদ্যোক্তাদের শিল্পাঞ্চলে কল-কারখান স্থাপনে উৎসাহিত করবে।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান শিল্পখাতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে সরকারকে আরো কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান এবং সৌরি বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির উপর শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব করেন।

এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি মোঃ হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, কার্বন নিংসরন হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আমাদেরকে অদূঢ় ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি ব্যবহার কে উৎসাহিত করতে হবে এবং রাজধানী ঢাকা সহ সারাদেশে ‘ইলেকট্রিক চার্জিং স্টেশন’ স্থাপনে এখনই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।