প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

চিনির পাইকারি দামে উত্থান-পতন, খুচরা বাজারে হুজুগ

রোকন মাহমুদ
১৫ আগস্ট ২০২২ ১৮:০২:০৮ | আপডেট: ২ years আগে
চিনির পাইকারি দামে উত্থান-পতন, খুচরা বাজারে হুজুগ

দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়ার দুই দিন পার হতেই অস্থির হয়ে উঠেছে চিনির বাজার। পাইকারি বাজারে শনিবার হঠাৎ খোলা সাদা চিনির দাম কেজিতে ৬ টাকা বাড়ে। তবে রোববার দাম কিছুটা কমলেও এখনও আগের সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ৪ টাকা বেশি রয়েছে।

পাইকারি বাজারে এমন অবস্থায় খুচরা বাজারে দাম বৃদ্ধির হুজুগ সৃষ্টি হয়েছে। কোন কোন বাজারে কেজিপ্রতি ৮ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দাম স্থির হলে চিনির দামও স্থির হয়ে যাবে। মূলত জ্বালানি তেল ও ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে চিনির বাজার অস্থির হয়ে ওঠেছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও মৌলভী বাজারের পাইকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজধানীর বড় পাইকারি মৌলভী বাজারে খোলা সাদা চিনি বিক্রি হয়েছিল ৭৭ থেকে ৭৮ টাকা কেজি। শনিবার হঠাৎ কেজিপ্রতি ৬-৭ টাকা বেড়ে ৮৪ টাকায় বিক্রি হয়। তবে রোববার কিছুটা কমে ৮২.৯০ টাকা বিক্রি হয়।

মৌলভীবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মেসার্স নিউ সালাউদ্দীন এন্ড ব্র্যাদার্স এর সত্ত্বাধিকারী হাজী সালাউদ্দীন দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, চিনির বাজার গত দুই দিন যাবত অস্থির হয়ে ওঠেছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ৬ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। তবে আজ (রোববার) দাম কিছুটা কমেছে। তবে ডলারের দাম স্থির না হলে হয়তো বাজার স্থির হবে না।

রোববার রাজধানীর কারওয়ানবাজার ও সেগুনবাগিচাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ বাজারে চিনি বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা কেজি।

বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকে চিনি কেনা ও অন্যান্য খরচসহ প্রতিকেজিতে খরচ পড়ছে ৮৬ টাকা, তাই তারা ৯০ টাকায় বিক্রি করছেন।

অনেক খুচরা দোকানি পাইকারি বাজারের অস্থিরতায় চিনি কেনা বন্ধ রেখেছেন বলেও জানান। এতে বাজারে সরবরাহ কিছুটা কমেছে। এক সপ্তাহ আগেই এসব দোকানে খুচরায় চিনি বিক্রি হয়েছিল প্রতি কেজি ৮২ থেকে ৮৩ টাকা।

সরকারি ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত এক মাসে চিনির দাম বেড়েছে ১১ শতাংশ।

রোববার সেগুনবাগিচা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি এক সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজার থেকে চিনি কিনেছিলাম ৭৮ টাকা কেজি, অন্যান্য খরচসহ আমি ৮২-৮৩ টাকা কেজি বিক্রি করতে পেরেছি। কিন্তু এখন আমার কেনাতেই পড়ছে ৮৬-৮৭ টাকা কেজি। বাজারের অনেক দোকানদার বাড়তি দামে চিনি কিনেছে। তবে দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় আপাতত আমি চিনি কেনা বন্ধ রেখেছি।’

এর আগে গত ১০ আগস্ট দেশের বাজারে চিনির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে রিফাইনারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন।

প্রস্তাবে বলা হয়, চিনি আমদানির জন্য যখন ঋণপত্র খোলা হয়, তখন ডলারের দাম ছিল ৮৩-৮৫ টাকা। কিন্তু এখন ওইসব এলসির মূল্য পরিশোধের সময় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আমাদের কাছ থেকে প্রতি ডলার ১১৫ টাকা হারে বিনিময়মূল্য আদায় করছে। আগে টনপ্রতি চিনি আমদানিতে শুল্ক দিতে হতো ২২ হাজার থেকে ২৩ হাজার টাকা, এখন ২৮ হাজার থেকে ২৯ হাজার টাকা লাগছে।