টানা তিনদিনের সূচক পতনের মুখে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। সেইসঙ্গে একমাসের ব্যবধানে আবারও হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে লেনদেন।
২০২২ সালের প্রথম লেনদেন হয়েছিল ২ জানুয়ারি। সেদিন লেনদেন হয়েছিল ৮৯৪ কোটি টাকা। তারপর দিন ৩ জানুয়ারি ১৩ দিনের ব্যবধানে আবারও হাজার কোটি টাকায় ফিরে আসে লেনদেন, যা ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছে মোট ৯০৫ কোটি টাকা। রোববার লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২৩৫ কোটি টাকা।
লেনদেনের শুরুতে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনার আগ্রহে সূচকের উত্থান দেখা যায় বেলা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। এরপর বদলে যেতে থাকে সূচকের উত্থান। বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রিতে বেশি মনোযোগি হওয়ায় পতনে আটক যায় সূচক, যা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত দৃশ্যমান ছিল।
ফলে টানা তৃতীয় দিনে গড়ালো ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স’র পতন। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ১৭ ফেব্রুয়ারি সূচক কমেছিল ৫২ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট। দুদিন সাপ্তাহিক ছুটির পর রোববার ২০ ফেব্রুয়ারি সূচক কমেছিল ৬৪ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট। এবং শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে পুঁজিবাজার একদিন বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার ২২ ফেব্রুয়ারি লেনদেন শেষে সূচক কমেছে ৮ দশমিক ৭১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯১৭ পয়েন্টে।
এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের দুইদিনের লেনদেনে প্রতিদিনেই কমেছে ডিএসইএক্স সূচক। এছাড়া ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস ৩.৫৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৯৫ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৯ দশমিক ২৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৩৬ পয়েন্টে।
মঙ্গলবার লেনদেনে ১৭৩টি কোম্পানি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে। কমেছে ১৫৪টির, দর পাল্টায়নি ৪৯টির।
মঙ্গলবার সূচক পতনের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবিসি)। কোম্পানিটির দশমিক ৯২ শতাংশ শেয়ার দর কমায় সূচক কমেছে ২.৮৩ পয়েন্ট।
এছাড়া টেলিকম খাতের রবি’র শেয়ার দর ১.০৮ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ১.৯২ পয়েন্ট। ওয়াটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিসের শেয়ার দর কমায় সূচক কমেছে ১.৭ পয়েন্ট।
এছাড়া বেক্সিমকো লিমিটেড, স্কয়ারফার্মা, লিন্ডে বিডি, তিতাস গ্যাস, সোনালী পেঁপার, পাওয়ার গ্রিড, প্রাইম ব্যাংকের শেয়ার দর পতনের সূচক কমেছে ৪.৬৪ পয়েন্ট।
শেয়ার দর বৃদ্ধিতে সূচক উত্থানে তরান্বিত করছে গ্রামীনফোন, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, সাইফ পাওয়ার, সামিট পাওয়ার, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পেনিসসোলার, এডিএনটেলিকম, ড্রাগন সোয়েটার, আইপিডিসি, ইস্টার্ন ব্যাংক।
এদিন দর বৃদ্ধির দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল এডিএন টেলিকম। কোম্পানিটির শেয়ার দর দিনের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে ৫৩ টাকার শেয়ার পৌছেছে ৫৮ টাকা ৩০ পয়সায়।
এছাড়া নয় শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে এপেক্স স্পিনিং, মেঘনা পেট, ড্রাগন সোয়েটার ও পেনিন সোলারের।
খাতভিত্তিক লেনদেনে মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল তথ্য ও প্রযুক্তি খাত। লেনদেনে এ খাতের ৯০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।
বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে লেনদেন হওয়া জীবন বিমা খাতের ৭৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। বস্ত্র খাতের ৬৩ শতাংশ আর প্রকৌশল খাতের ৪৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।