বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলোর আয়ে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, মুদ্রাস্ফীতির কারণে দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ও ঘরবাড়ির কাজ সীমিত হওয়ার ফলে এ খাতের আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানি রয়েছে সাতটি। এর মধ্যে জুলাই-২০২১ থেকে মার্চ-২০২২ প্রান্তিকের অর্থাৎ নয় মাসের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) প্রকাশ করেছে ৫টি কোম্পানি। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের নয় মাসে সিমেন্ট কোম্পানিগুলোর আয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
কোম্পানিগুলো হলো আরামিট সিমেন্ট লিমিটেড, কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেড, ক্রাউন সিমেন্ট লিমিটেড, মেঘনা সিমেন্ট লিমিটেড এবং প্রিমিয়ার সিমেন্ট লিমিটেড।
আরামিট সিমেন্ট
আরামিট সিমেন্ট লিমিটেডের জুলাই ২০২১ -মার্চ ২০২২ পর্যন্ত অর্থাৎ তিন প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৭ টাকা ৬২ পয়সা। গত বছরের একই প্রান্তিকে কোম্পনিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৪৮ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ৬ টাকা ৭৭ পয়সা।
কনফিডেন্স সিমেন্ট
কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেডের আলোচ্য সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৮ টাকা ৪৬ পয়সা। গত বছরের একই প্রান্তিকে কোম্পনিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ১৪ টাকা ১৬ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ৫ টাকা ৭০ পয়সা।
ক্রাউন সিমেন্ট
একই সময়ে ক্রাউন সিমেন্ট লিমেটেডের শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে (ইপিএস) ৯১ পয়সা। গত বছরের একই প্রান্তিকে কোম্পনিটির ইপিএস ছিল ৪ টাকা ৭৩ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ৩ টাকা ৮২ পয়সা।
মেঘনা সিমেন্ট
মেঘনা সিমেন্ট লিমিটেডের শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৪৫ পয়সা। গত বছরের একই প্রান্তিকে কোম্পনিটির শেয়ার প্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৩৪ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ১১ পয়সা।
প্রিমিয়ার সিমেন্ট
প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস লিমিটেডের শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৩৭ পয়সা। গত বছরের একই প্রান্তিকে কোম্পনিটির শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৪ টাকা ০৭ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ৩ টাকা ৭০ পয়সা।
এ বিষয়ে আরামিট সিমেন্টের কোম্পানি সচিব সাইদ কামরুজ্জামান বিজনেস পোস্টকে বলেন, যেহেতু সিমেন্ট সেক্টরের কাঁচামালের দাম গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ ডলার বেড়েছে। পাশাপাশি জাহাজ ভাড়া বেড়েছে। এছাড়া ডলারের দর এবং জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে সিমেন্টের উৎপাদন খরচ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় মার্কেটে সিমেন্টের দাম বাড়েনি। ফলে এ সেক্টরটা ধুঁকছে।
কনফিডেন্স সিমেন্টের কোম্পানি সচিব দেলোয়ার হোসাইন বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সিমেন্টের কাঁচামালের দাম ও জাহাজ ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া বাজারে অসম প্রতিযোগিতার ফলে এ সেক্টরের আয় কমেছে।
সিমেন্ট কোম্পানিগুলোর গত অর্থবছরের ডিভিডেন্ড
আরামিট সিমেন্ট গত অর্থবছরে ১২ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল, কনফিডেন্স সিমেন্ট ২৫ শতাংশ নগদ, ক্রাউন সিমেন্ট ২০ শতাংশ নগদ, মেঘনা সিমেন্ট ৫ শতাংশ নগদ ৫ শতাংশ বোনাস, প্রিমিয়ার সিমেন্ট ২০ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো।
চলতি অর্থবছরে সিমেন্ট কোম্পানিগুলো কেমন ডিভিডেন্ড দিতে পারবে তা নির্ভর করবে কোম্পানিগুলোর শেষ প্রান্তিকের আয়ের ওপরে।