তাঁত ও দেশীয় শিল্প রক্ষার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাংলাদেশি ফ্যাশন মডেল এবং নকশাকার বিবি রাসেল।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিও'র মাধ্যমে সোমবার দেশবাসীর প্রতি এ অনুরোধ জানান তিনি।
‘তাঁত শিল্পের ঐতিহ্য কী আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব?’ ক্যাপশনের সেই ভিডিও'তে দেশীয় শিল্প নিয়ে কথা বলেন এ নকশাকার।
বিবি রাসেল বলেন, ‘দেশে ফিরে এসেছি ১৯৯৪ সালে। আর এটা হলো ২০২২। কতদিন হয়ে গেছে, আমি দিন-রাত একটা কাজই করি একটা জিনিস নিয়েই চিন্তা করি। যেহেতু আমি দেশে ফিরে এসেছি, এখন আমার পরিবারে বাবা-মা নেই, ভাই-বোন-দুই ছেলেও বাইরে, আমি যেটার জন্য দেশে এসেছি, সেটাই আমার স্বপ্ন। বাংলাদেশে তাঁতের জিনিস, অন্যান্য ধরণের হাতের জিনিস প্রচলিত আছে। ক্রাফট ম্যানদের হাতে যে জাদু আছে, ওরা যেন প্রভার্টি মার্জিন থেকে সম্মানের সঙ্গে উঠতে পারে। নিজেরা উঠে দাঁড়াতে পারে যেন ওদের ছেলে-মেয়ের শিক্ষা-স্বাস্থ্য নিশ্চিত হয়। এর জন্যই কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি এই বয়সে ১৬ ঘণ্টা কাজ করি। এইটা কোন কমপ্লেইন না, আমার ভালো লাগে। আর কোনদিনই ছুটি নেই না কারণ আমি তো এখনো চঙ্গের প্রথম স্টেপে নাই। আর আমি হতাশ হওয়ার মেয়ে না। আমি মনে করি এই শিল্প একদিন উপরে উঠবেই।’
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এ ফ্যাশন মডেল আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে হাতজোড় করে বলছি- প্লিজ আপনারা যদি ৫ টা কাপড় কেনেন, একটা দেশীয় হাতের তৈরি নেবেন। আমি কোন আন্দোলন করতে আসিনি, মানা করছি না আপনারা মেশিন মেইড কিনবেন না বা পাওয়ারলুম কিনবেন না কিন্তু হাতের তৈরি হ্যান্ডলুম দেখুন। বেঙ্গল ব্রিটিশ সময়, মুঘল সময়ে আমরা মসলিন-জামদানি করেছি, আবার যেন হারানো সেই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে পারি। আমাদের ক্রাফট ম্যানরা যেন মর্যাদার সঙ্গে মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারে।’
এ নকশাকার আরও বলেন, ‘ক্রাফট ম্যানদের যেন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট হয়, তাদের ছেলে মেয়েরা যেন শিক্ষিত হয়, এর চেয়ে বেশি কিছু তো আর চাওয়া নেই। আমি অনুগ্রহ করে বলছি-আপনাদের হয়তো আমার ডিজাইন ভালো লাগে না, কিন্তু অন্যরাও করছে। প্লিজ আপনারা দেখবেন প্রোডাক্টটা যেন দেশীয় হয়, আমি অনেক দেশে কাজ করি- যখন আমার জিনিস বাংলাদেশের এইটা ১০০% বাংলাদেশি। কেউ ১০ টাকা রোজগার করলে ৯ টাকা দেশে থাকে। আমি বাইরে থেকে জিনিস এনে করি না, যে দেশে যাই সেই দেশের জিনিসগুলি উঠাই। তো আজকে আপনাদের অনুগ্রহ করে বলছি- এই শিল্পগুলি শেষ হতে দিয়েন না।’
এসময় সকলের সহযোগিতা কামনা করেন বিবি রাসেল।