শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের উদ্যোগে নাটোরে অবস্থিত ‘নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল’ এর কেইন ক্যারিয়ারে আখ নিক্ষেপের মাধ্যমে ২০২২-২০২৩ মৌসুমের আখ মাড়াই কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।
শুক্রবার এই কর্মসূচী উদ্বোধন করা হয়। নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের এটি ৯০তম আখ মাড়াই কার্যক্রম।
এ সময় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার শহীদুল ইসলাম বকুল, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, বিএসএফআইসি’র চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) আরিফুর রহমান অপু, বিএসএফআইসি’র সচিব চৌধুরী রুহুল আমিন কায়সার, নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আনিসুল আজমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, স্থানীয় আখচাষীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কেইন কেরিয়ার প্রাঙ্গনে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
নর্থ বেঙ্গল চিনিকলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের চিনিকলের সম্ভাবনা কথা তুলে ধরার পাশাপাশি আখচাষে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টারের ব্যবহার যান্ত্রিকীকরণের নতুন যুগের সূচনা হলো বলে জানিয়েছেন বিএসএফআইসি’র চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) আরিফুর রহমান অপু। আখ কর্তন কাজে শ্রমিক মজুরি ব্যয় কমানোর স্বার্থে KAFKO এর সহযোগিতায় এ চিনিকলের বাণিজ্যিক খামারে কম্বাইন্ড হাভেস্টার ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কম্বাইন্ড হাভেস্টার ব্যবহারের ফলে আসন্ন ২০২২-২৩ মাড়াই মৌসুমে ৯০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা আখ কর্তন কাজে শ্রমিক মজুরি ব্যয় সাশ্রয় হবে।
২০২২-২০২৩ আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘একটি জাতিকে উন্নত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে শিল্প-কারখানার যে বিকল্প নেই তা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন, এদের উন্নতি না হলে দেশের উন্নতি হবে না, স্বাধীনতার সুফল আসবে না। বঙ্গবন্ধুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ছিল কৃষিকে প্রাধান্য দেওয়া। বিশেষ করে শিল্পভিত্তিক কৃষি। পাকিস্তানি শাসন আমলে এ দেশে বিশেষত দেশের উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে শিল্পের তেমন প্রসার ছিল না। একমাত্র চিনি শিল্পই ছিল এখানকার সম্পদ। যার বেশিরভাগই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে। তাই দেশ গড়ার দিকে নজর দিয়ে তিনি চিনি শিল্পকে নতুন করে সাজানোর জন্য জোর দিয়েছিলেন।’
শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আখের ফলন বৃদ্ধিতে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো কোম্পানি বাংলাদেশ
এর সহযোগিতায় বন্ধু সেবা অ্যাপের সাহায্যে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এসএমএস এর মাধ্যমে অ্যাপটির ডাটাবেজে সংরক্ষিত প্রায় ৬৫ হাজারের বেশী আখচাষিকে আখের পরিচর্যার জন্য কখন কি করণীয় ও আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্যাদি তাৎক্ষনিকভাবে এসএমএম এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘হ্যালো চাষী অ্যাপে’ সংরক্ষিত ডাটাবেজে বিদ্যমান মোবাইলে নাম্বারে সারাসরি ফোন দিয়ে আখচাষিদের সাথে কথা বলে তাদের সমস্যা অবহিত হওয়া এবং তাৎক্ষণিকভাবে তা সমাধানের জন্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া চাষিদের আখ চাষে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে আখের মূল্য বৃদ্ধি করে মিল গেটে প্রতি কুইন্টাল ৩৫০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা এবং বহি কেন্দ্রে ৩৪৩ টাকা থেকে ৪৪০ টাকা করা হয়েছে। আখের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি ভবিষ্যতেও পর্যায়ক্রমে পুনঃনির্ধারণ করা হবে বলে বিবেচনাধীন আছে।’