প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

পদ্মা সেতু: তৈরি হবে নতুন চালের বাজার

রোকন মাহমুদ
২৬ জুন ২০২২ ১৭:০১:৩৭ | আপডেট: ১ year আগে
পদ্মা সেতু: তৈরি হবে নতুন চালের বাজার

বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখী সেতু চালু হয়েছে শনিবার। এ সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় তৈরি হবে চালের নতুন বাজার।

দেশের এ অঞ্চলের সব জেলা থেকেই উৎপাদিত ধান ও চাল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হবে।

ব্যবসায়ী ও কৃষি বিপনণ বিভাগ বলছে, দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার মধ্যে বর্তমানে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহসহ কয়েকটি জেলায় রাইস মিল রয়েছে। বরিশাল, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলায় উৎপাদিত ধান এসব মিলে চলে যায়। সেখান থেকে চাল হয়ে আবার দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। এসব জেলার উদ্বৃত্ত চাল ঢাকায় আসে। পদ্মাসেতু চালু হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা, বাগেরহাট, রবিশাল ভোলাসহ প্রায় সব জেলায় উৎপাদিত ধান চাল সরাসরি ঢাকা হয়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সরবরাহ করা যাবে। এতে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ধান-চালের বাণিজ্য আরো বাড়বে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেবে, বোরো মৌসুমের উৎপাদিত ধান থেকেই দেশের দুই তৃতীয়াংশ চালের চাহিদা পূরণ হয়। প্রতি বছর দেশে বোরো মৌসুমে প্রায় দুই কোটি টন চাল উৎপাদন হয়। যার ২০ শতাংশই আসে দক্ষিণাঞ্চলের যশোর, খুলনা, বরিশাল ও ফরিদপুরে উৎপাদিত ধান থেকে। দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৭ লাখ টন চাল উৎপাদন হয় যশোরে।

দক্ষিণাঞ্চল ব্যতীত দেশের চালের বড় বাজার হিসেবে পরিচিত রাজশাহী, দিনাজপুর, সিলেট থেকে আসে মোট চাহিদার ২২ শতাংশ চাল।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দক্ষিণাঞ্চলে প্রচুর ধান হলেও সব জেলা থেকে সরাসরি ঢাকায় চাল আসে না। কুষ্টিয়া দেশের বড় চালের বাজার হলেও এই চাল পাটুরিয়া দিয়ে ফেরি পার হয়ে ঢাকায় আসে। এছাড়া খুলনা ও বরিশালের উৎপাদিত ধান চলে যায় কুষ্টিয়াসহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে। সেতু চালু হওয়ায় ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর সরাসরি চালের বাণিজ্যের পথ তৈরি হয়েছে।

জানতে চাইলে কৃষি বিপণ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগের প্রধান (উপ-পরিচালক) জি এম মহিউদ্দীন দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, এখন বরিশালে উৎপাদিত ধান কুষ্টিয়াতে আসে, সেখান থেকে চাল হয়ে আবার বরিশালের দিকে যায়। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য জেলার উৎপাদিত চাল এখানকার চাহিদা মিটিয়ে উত্তরবঙ্গ হয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। সেতু চালু হওয়ায় সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হবে। এতে সব জেলাতেই রাইসমিল গড়ে ওঠবে এবং চাল সরবরাহ করতে পারবে।’

সেতু চালু হওয়ায় সরবরাহ খরচ ও সময় উভয়ই কমবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ রাইস মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, এখন আমরা খুলনা ও বরিশাল থেকে কোনো চাল পাই না। অথচ এসব অঞ্চলে প্রচুর ধান উৎপাদিত হয়। সেতু চালু হওয়ায় এই জেলাগুলোর চাল ঢাকা আসতে পারবে। এতে ঢাকার চালের বাজার আরো বড় হবে। এছাড়া চালের সরবরাহ খরচ ও সময় কমবে।