প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

পুঁজিবাজারের দরপতন রোধে ফ্লোর প্রাইস কি ভূমিকা রাখতে পারবে?

আনিসুর রহমান সুমন
৩১ জুলাই ২০২২ ১৮:৪৬:৩১ | আপডেট: ৩ years আগে
পুঁজিবাজারের দরপতন রোধে ফ্লোর প্রাইস কি ভূমিকা রাখতে পারবে?

দরপতন প্রতিরোধে চলতি বছরের ২৫ মে কোন কোম্পানির শেয়ার দর কমার সর্বোচ্চ সীমা বা সার্কিট ব্রেকার দুই শতাংশ নির্ধারণ করেছিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে পুঁজিবাজারের অব্যাহত পতন রোধে দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে গত বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় বারের মত ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারের দামের সর্বনিম্ন সীমা বেঁধে দেওয়া) আরোপ করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

ফ্লোর প্রাইস আরোপ করার পর রোববার বড় উত্থান হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই)প্রধান সূচক ডিএসইক্স বেড়েছে ১৫৩ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট। স্বল্পমেয়াদে এর কার্যকারিতা স্বীকার করলেও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন- ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ফ্লোর প্রাইস দিতে বাধ্য হয়েছি: বিএসইসি চেয়ারম্যান

ঈদুল আজহার ছুটি পরবর্তী পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবস ১২ জুলাই থেকে টানা ৯ কার্যদিবস পতন হয় ডিএসইতে। এর পর দুই কার্যদিবস উত্থান হয়ে আবার ২ দিন টানা পতন হয় বাজারে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসই,র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার পয়েন্টের মাইলফলক বা মনস্তাত্ত্বিক সীমার নিচে নেমে আসায় বৃহস্পতিবার ফ্লোর প্রাইস আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

বিএসইসি জানায়, করোনা পরবর্তী ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে শেয়ারের দামের পতন ঠেকাতে ২০২০ সালের ১৯ মার্চ পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়। এভাবে দুই বছর আগে মার্চে শেয়ারবাজারের ভয়াবহ পতন থামিয়েছিল বিএসইসির তৎকালীন কমিশন। ওই কমিশনে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন এম খায়রুল হোসেন।

পুঁজিবাজারের পতন রাধে ফ্লোর প্রাইস কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে কিনা এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছন বাজার সংশ্লিষ্টরা। কেউ বলছেন এটা পুঁজিবাজারের জন্য উপকারি আবার কেউ বলছেন এটার প্রভাব সাময়িক।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বিশ্বের কোন দেশেই ফ্লোর প্রাইস নেই। এটা পুঁজিবাজারের স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করে। বাজারকে স্বাভাবিক গতিতে চলতে দেয়া উচিত।

আরও পড়ুন- ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের দিন পুঁজিবাজারে উত্থান

তিনি আরো বলেন, বাজারে ফ্লোর প্রাইসের প্রভাব বুঝতে আরো দু’একদিন সময় লাগবে।

মডার্ন সিকিউরিটিজ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুঁজিস্তা নূর-ই-নাহরীন দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, দরপতন রোধে পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ একটি সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত। এর ফলে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে এসেছে।

রশীদ ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমদ রশীদ লালী বলেন, অব্যাহত দরপতনের পরিপেক্ষিতে পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। এর ফলে বড় বিনিয়োগকারীরা অ্যাক্টিভ হয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, ফ্লোর প্রাইস আরোপ বাজারের পতন রোধে দীর্ঘমেয়াদি কোন সমাধান নয়।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম রোববার এক অনুষ্ঠানে বলেন, বিএসইসি দর কমার ক্ষেত্রে ২ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার এবং ফ্লোর প্রাইস দিতে চায় না। কিন্তু সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরকে রক্ষা করার জন্য দিতে বাধ্য হয়। কারণ আমাদের দেশে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেশি। উন্নত দেশে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এমনটি করা লাগে না।