পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অর্থ পাচার অপরাধীদরে মধ্যে একটি জনপ্রিয় প্রক্রিয়া। এতে কোনো ধরনের অস্বাভাবকি লেনদেন হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএসইসি’র কমিশনার ডঃ রুমানা ইসলাম।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি’র (সিএসই) উদ্যোগে শনিবার সিএসই’র চট্টগ্রামস্থ প্রধান কার্যালয়ে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ (এএমএল এন্ড সিএফটি) বিষয়ক একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএসইসি’র কমিশনার ডঃ রুমানা ইসলাম বলেন, ‘পুঁজিবাজারের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং বিষয়ক ব্যাপারটিকে ভালভাবে জানতে হবে। কোনো ধরনের অস্বাভাবকি লেনদেন হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ এ্যাক্ট, ১৯৯৩ অনুযায়ী পুঁজিবাজারের অপরাধগুলো হলো- মার্কেট ম্যানিপুলেশন এবং ইনসাইডার ট্রেডিং। এই দুটি মূল অপরাধ ছাড়াও অনেক ছোট বড় অপরাধ রয়েছে।’
আরও পড়ুন- পুঁজিবাজারের আইটি খাতের কোম্পানিগুলোর আয় বেড়েছে
বিএসইসি’র কমিশনার বলেন, ‘যে কোনো সন্দেহমূলক লেনদেন কিন্তু মানি লন্ডারিং নয়। মানি লন্ডারিং এর যে সংজ্ঞা আছে সে অনুযায়ী যদি কোন অপরাধ বা লেনদেন সংঘটিত হয় তখনই তাকে মানি লন্ডারিং আইনে আওতাভুক্ত করা যাবে। এমন কোনো লেনদেন যা সন্দেহজনক মনে হচ্ছে, হতে পারে একটি বড় সংখ্যার শেয়ার হঠাৎ করে আস্বাভাবিক মূল্যে হাত-বদল হচ্ছে বা কয়েকজনের মধ্যে নিয়মিত লেনদেন হচ্ছে বা কোন স্বচ্ছ উৎসবিহীন লেনদেন হচ্ছে; তাহলে দ্রুত সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবেন।’
এছাড়াও যখন কেনো নতুন ক্লায়েন্ট নিয়ে কাজ করবেন তখনও সর্তক থাকার পরামর্শ দেন রুমানা ইসলাম।
সিএসই’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অর্থ পাচার অপরাধীদরে মধ্যে একটি জনপ্রিয় প্রক্রিয়া। সব সময়ই পুঁজিবাজার পাচারকারীদরে র্টার্গেটে থাকে। অর্থ পাচার প্রতিরোধে পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারীদরে সব সময় ভালো ব্যবসার নীতি অনুশীলন করা উচিত।’
আরও পড়ুন- ১১ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ বিজনেস সামিট
তিনি বলেন, ‘মানি লন্ডারিংকে শুধুমাত্র ব্যাংকের সাথে যুক্ত বলে মনে করা হয়। কিন্তু বাস্তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠন, পুঁজিবাজার মধ্যস্থতাকারীসহ ব্যাংক এবং ননব্যাংকিং উভয় ধরনের প্রতষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়। এক্ষত্রে প্রথমইে যে বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া নেয়া উচিত সেটি হলো (know your customers/clients) বা ‘KYC’ বা ‘আপনার ক্লায়েন্টকে জানুন’।
কমিশনের এক্সকিউিটভি ডিরেক্টর মোশাররফ বাংলাদেশ ব্যাংক প্রনীত বিএফআইইউ সার্কুলার, সিএমআই সিস্টেম বিষয়ে তার উপস্থাপনা প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে সিএসই’র চীফ রেগুলেটরী অফিসার জনাব মেহেদী হাসান, সিএফএ সকলকে কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল নিয়মাবলী মেনে পুঁজিবাজারের ব্যবসা পরচিালনা করার জন্য অনুরোধ জানান।
সিএসই’র এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এক্সচেঞ্জের সংশ্লিষ্ট সকল স্টক ব্রোকার ও স্টক ডিলাররা উপস্থিত ছিলেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএসইসি’র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ইডি) মীর মোশাররফ হোসেন চৌধুরী, সিএসই’র পরিচালক জনাব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, এফসিএমএ, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মো. গোলাম ফারুক, চীফ রেগুলেটরী অফিসার (সিআরও) জনাব মোহাম্মদ মেহেদী হাসান। এছাড়াও সিএসই’র বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানরাও উপস্থিত ছিলেন।