মিরাজ শামস
মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এই দাম বৃদ্ধিতে খুচরা বিক্রেতারা দোষারোপ করছেন পাইকারদের।
আড়তদাররা বলছেন, আমদানিকারক এবং পাইকারি বিক্রেতারা কোনো বৈধ কারণ ছাড়াই বড় লাভের আশায় এ দাম বাড়িয়েছেন। গত দুই বছর ধরে তারা এই একই ধরনের কাজ করছেন।
যদিও পাইকারি বিক্রেতারা দাবি করেছেন যে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আর খুচরা বিক্রেতারা বলেছেন, বড় ব্যবসায়ী এবং আমদানিকারকরা কম পেঁয়াজ মজুদের সুযোগ নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার আমদানি করা পেঁয়াজ স্থলবন্দরে ৩৮-৪২ টাকায়, পাইকাররা ৫০-৫২ টাকায় এবং খুচরা বিক্রেতারা ৬০- ৬৫ টাকায় বিক্রি করছিলেন।
কৃষি বিপণন বিভাগ এবং টিসিবি সূত্র জানায়, রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজ শহরের বাজারে ৬৫-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারী বিক্রেতা মো. ইয়াকুব মন্ডল বলেন, ভারতে বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ সরবরাহ সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছে। সে দেশে দাম কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু এটি একটি অস্থায়ী সমস্যা।
তাছাড়া প্রতি বছর পুজোর সময় সাধারণত পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যায়। আমদানিকারকরা সময়ের আগে পেঁয়াজ আমদানি ও মজুদ করে পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা এখন বর্তমান ইস্যুকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে প্রচুর মুনাফা লাভ করছে বলে জানান মো. ইয়াকুব মন্ডল।
ভারতের কৃষি উৎপাদন বাজার কমিটির মতে, মহারাষ্ট্রের নাসিক অঞ্চলে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে মাত্র ২০ শতাংশ।
মিরপুর ১-এর খুচরা বিক্রেতা নাসির উদ্দিন বলেন, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় পেঁয়াজ বিক্রেতারাও এর দাম বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ গত দুই বছরে উপাদানটির পর্যাপ্ত উৎপাদন দেখেছে। সুতরাং দাম বৃদ্ধি অযৌক্তিক।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান দ্য বিজনেস পোস্ট'কে বলেন, আমরা গত দুই বছরের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রস্তুতি নিয়েছি। ইতোমধ্যেই ভারত থেকে ৫ হাজার টনের বেশি পেঁয়াজ দেশে এসেছে।
তিনি বলেন, তুরস্ক থেকে আমদানিও বাংলাদেশে পৌঁছে যাচ্ছে। টিসিবি বুধবার থেকে সেই দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করবে।
শফিকুজ্জামান আরও বলেন, যাকে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধে সরকার আইনি ব্যবস্থা নেবে।
কৃষি সম্প্রসারণ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, বাংলাদেশের বার্ষিক ২৮ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে এবং ধীরে ধীরে উপাদানটির উৎপাদন বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বছরে ৭-৮ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করে, কারণ উৎপাদনের ২৫-৩০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়।