প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

বসুন্ধরার এবিজিকে কেন বেছে নিয়েছে সিএসই, জানতে চায় বিএসইসি

নিয়াজ মাহমুদ
২৭ আগস্ট ২০২২ ১৩:৫৭:০৪ | আপডেট: ২ years আগে
বসুন্ধরার এবিজিকে কেন বেছে নিয়েছে সিএসই, জানতে চায় বিএসইসি

কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে কেন বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবিজি লিমিটেডের নাম প্রস্তাব করেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), তা ব্যাখ্যা করতে বলেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

একইসঙ্গে স্টক ব্যবসায় অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতার পাশাপাশি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৫ শতাংশ শেয়ার কেনার প্রস্তাবের প্রক্রিয়া এবিজি'র কাছে জানতে চেয়েছে বিএসইসি।

সিএসই’র একটি শেয়ারের জন্য ১৫ টাকা অফার করছে এবিজি লিমিটেড। সে হিসেবে ২৫ শতাংশ শেয়ারের দাম পড়বে প্রায় ২৪০ কোটি টাকা। তবে বিএসইসি'তে এবিজি লিমিটেডের সক্ষমতা এবং পুঁজিবাজারে অভিজ্ঞতার কোনো নথি জমা দেয়নি সিএসই।

২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর সংবাদপত্রে কৌশলগত বিনিয়োগকারী চেয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সিএসই।

এরপর সিএসই’র কৌশলগত অংশীদার হওয়ার জন্য একটি প্রস্তাব জমা দেয় এবিজি লিমিটেড। গত ১ আগস্ট বিএসইসির কাছে সে প্রস্তাব পাঠায় সিএসই। পরবর্তীতে ১৭ আগস্ট পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে সিএসই’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে এবিজি লিমিটেডকে ২৯ আগস্টের মধ্যে বিএসইসির কাছে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানাতে বলা হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি সিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গোলাম ফারুক।

এবিজি লিমিটেড একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। এ কোম্পানির পর্যাপ্ত সম্পদ, জনবল, প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং বিনিয়োগ সক্ষমতা রয়েছে। তবে, পুঁজিবাজারে কোম্পানিটির সক্ষমতা এবং অভিজ্ঞতার কোন সনদ সিএসই জমা দেয়নি বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

এদিকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সিএসই’র আর্থিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে কেপিএমজি দ্বারা প্রস্তুত করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসকাউন্টেড নগদ প্রবাহ পদ্ধতি অনুযায়ী শেয়ার প্রতি নির্দেশক মূল্য ছিল ১১.৭৫ টাকা, আয়ের অনুপাত অনুযায়ী ১১.০৪ টাকা এবং বুক অনুপাত অনুযায়ী শেয়ার প্রতি মূল্য ছিল ২৮.৮৭ টাকা।

পরবর্তীতে সিএসই আর আর্থিক প্রতিবেদন আপডেট করেনি এবং শেয়ারের মূল্য নির্ধারণের প্রক্রিয়াও উল্লেখ করেনি, বলে উল্লেখ করেছে বিএসইসি।

ডিমিউচুয়ালাইজেশন স্কিমের অধীনে ২৫ শতাংশ মালিকানা বিক্রি করতে গত কয়েক বছর ধরে ভারত, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং হংকং থেকে কৌশলগত অংশীদার খুঁজছে সিএসই।

এদিকে ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের পর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে বাজারে স্বচ্ছতা ও মনিটরিং নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে দাবি জানায় স্টেকহোল্ডাররা। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে সংসদে ডিমিউচুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট পাস হয়। এটি এমন এক প্রক্রিয়া যা ব্যবস্থাপনা থেকে এর মালিকানাকে আলাদা করে।

ডিমিউচুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট ২০১৩ অনুসারে, সিএসই’র ৪০ শতাংশ শেয়ার তার সদস্যদের অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছিল এবং বাকি ৬০ শতাংশ ব্লক অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছিল। ব্লকের ৬০ শতাংশের মধ্যে ৩৫ শতাংশ প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে এবং বাকি ২৫ শতাংশ কৌশলগত বিনিয়োগকারীর হাতে থাকবে।

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের চীনা কনসোর্টিয়ামের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি কার্যকর হয়। পরবর্তীতে নিজেদের ২৫ শতাংশ শেয়ার ৯৪৭ কোটি টাকায় কনসোর্টিয়ামের কাছে বিক্রি করে ডিএসই।

সিএসই ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রামে ওপেন ক্রাই ট্রেডিং সিস্টেমের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। সিএসই বাংলাদেশে প্রথম অনলাইন ট্রেডিং সিস্টেম চালু করেছে।

গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিএইস'র পরিশোধিত মূলধন ৬৩৪ কোটি টাকা ও ৮০২ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।

সিএসইতে সিকিউরিটিজ এবং মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়।