প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

বাজেটে কর সুবিধা কমছে, বাড়তে পারে মোবাইলের দাম

হামিমুর রহমান ওয়ালীউল্লাহ
২৬ মে ২০২৩ ১৪:৫৫:০০ | আপডেট: ১০ মাস আগে
বাজেটে কর সুবিধা কমছে, বাড়তে পারে মোবাইলের দাম

আসন্ন জাতীয় বাজেটে মোবাইল ফোন শিল্পে প্রদত্ত করের রেয়াতি সুবিধা কমছে। এর ফলে মোবাইলের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক বাড়বে। একই সাথে স্থানীয়ভাবে মুঠোফোন প্রস্তুত বা সংযোজনে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এতে এ পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে।

একইসঙ্গে, মাইক্রো পার্টস আমদানিতে বিদ্যমান কর অব্যাহতি সুবিধার কিছু শর্ত শিথিল করা হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, স্থানীয় উৎপাদকদের মূল্য সংযোজন বাড়াতে সরকার সেলুলার ফোনের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধি ও মুঠোফোন প্রস্তুত বা সংযোজনে ভ্যাট আরোপের পরিকল্পনা করেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, মোবাইল ফোন নির্মাতারা বর্তমানে কিছু কাঁচামালের আমদানিতে ১ শতাংশ ও ১০ শতাংশ হারে শুল্ক প্রদান করে থাকে। তবে এই শুল্ক সম্ভবত যথাক্রমে ৫ শতাংশ এবং ১৫ শতাংশ করা হবে আগামী অর্থবছরে।

এছাড়া মোবাইল ফোন উৎপাদন পর্যায়ে ২ শতাংশ ভ্যাট বসানো হচ্ছে। বর্তমানে এ ক্ষেত্রে ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে। আর সংযোজন পর্যায়ে ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হচ্ছে।

শিল্পের অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিরা বলছেন, এই শুল্ক ও ভ্যাট বাড়লে সেলুলার ফোন ব্যয়বহুল হবে এবং সেক্টরটি চাপে পড়বে। তবে সরকার আশাবাদী যে একটি কঠোর কর রেয়াতি নীতি দেশের মোবাইল ফোন শিল্পে কমপক্ষে ২০ শতাংশ মূল্য সংযোজন নিশ্চিত করবে। ফলে মোবাইল ফোন প্ল্যান্ট স্থাপনে সহায়তা করবে এবং দেশে বৃহত্তর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।

দেশের মোবাইল ফোন শিল্প একসময় সম্পূর্ণভাবে আমদানির উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু সরকারের নীতিগত সহায়তা এবং নির্মাতাদের দক্ষতার জন্য এখন তা অনেকটা কমে এসেছে।

দেশে উৎপাদিত হ্যান্ডসেটগুলো এখন দেশের বার্ষিক চাহিদার ৭০ শতাংশেরও বেশি পূরণ করছে। ট্যাক্স নীতির ফলে দেশীয় পণ্য কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। সেই সাথে এ শিল্পকে আরও এগিয়ে নিতে সহায়তা করছে।

এছাড়াও হাই-টেক পার্কে মোবাইল ফোন উৎপাদন ইউনিট ১০ বছর পর্যন্ত করের আওতামুক্ত থাকছে।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) তথ্যমতে, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের ১৫টি প্ল্যান্টে প্রায় ৩.৪২ কোটি হ্যান্ডসেট উৎপাদন করেছে। এছা্ড়াও দেশে ১.৫২ কোটি ফোন আমদানি হয়েছে। এ খাতে আমদানিকারকরা ৩৮ শতাংশ কর প্রদান করে।

বাংলাদেশের মোবাইল হ্যান্ডসেট শিল্পের বর্তমান বাজারের আকার প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। ফোনের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ২০২০-২১ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৬.৩২ শতাংশ বেড়েছে।

বাংলাদেশ স্মার্টফোন উৎপাদন শিল্পে যাত্রা শুরু করে ২০১৭ সালের অক্টোবরে। ওই সময় দেশের প্রথম স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট উৎপদন কারখানা ‘ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ’ উদ্বোধন করা হয়েছিল।

অন্যান্য স্থানীয় হ্যান্ডসেট নির্মাতারা হল ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স (স্যামসাং), এডিসন ইন্ডাস্ট্রিজ (সিম্ফনি), আলামিন অ্যান্ড ব্রাদার্স (৫ স্টার), কার্লকেয়ার টেকনোলজি বিডি লিমিটেড (আইটেল এবং টেকনো), আনিরা ইন্টারন্যাশনাল (ইয়ুনস্টার), বেস্ট টাইকুন (বিডি) এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড (ভিভো), গ্রামীণ ডিস্ট্রিবিউশন (লাভা), বাংলাট্রনিক্স টেকনোলজি লিমিটেড (ডিটিসি), বেনলি ইলেকট্রনিক্স এন্টারপ্রাইজ (অপ্পো), ওকে মোবাইল, এবং মাইসেল টেকনোলজি লিমিটেড, ভাইব্রেন্ট সফটওয়্যার (বিডি) লিমিটেড, ডিবিজি টেকনোলজি বিডি লিমিটেড, লিনেক্স ইলেকট্রনিক্স বাংলাদেশ লিমিটেড, এবং আরএফএল ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড।