প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

বাতিলের ঝুঁকিতে বেক্সিমকোর সুকুক বন্ড

০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৬:০৭:৫৮ | আপডেট: ৩ years আগে
বাতিলের ঝুঁকিতে বেক্সিমকোর সুকুক বন্ড

নিয়াজ মাহমুদ

বিক্রি কম হওয়ায় বাতিলের ঝুঁকিতে পড়েছে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের (বেক্সিমকো) প্রস্তাবিত সুকুক বন্ড।

ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক এ বন্ড ইস্যুর সময় দ্বিতীয় দফায় ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

কিন্তু যদি এ সময়ের মধ্যেও অন্তত ৩০ শতাংশ আবেদন জমা না পড়ে তাহলে, পাবলিক অফারটি বাতিল করবে কমিশন।

গতকাল শেষ হওয়া সময়সীমার মধ্যে মাত্র ৭.৪৩ শতাংশ আবেদন সংগ্রহে সক্ষম হয় বেক্সিমকো সুকুক। যে কারণে বহুল আলোচিত এ সবুজ সুকুকের বিষয়ে সতর্কতা জারি করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

এ বিষয়ে সোমবার বেক্সিমকো বরাবর চিঠি পাঠায় বিএসইসি। এতে শর্ত জুড়ে দেয়ার পাশাপাশি দ্বিতীয় বারের মতো আবেদন সংগ্রহের সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ অনুসারে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ন্যূনতম সাবস্ক্রিপশন পূরণ না হলে পাবলিক অফারিং শেয়ার বাতিল হবে।

খুব উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে গত ১৬ আগস্ট বন্ড ইস্যু প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল পুঁজিবাজারের প্রথম গ্রিন সুকুক বন্ডের।

কমিশন তার চিঠিতে বলেছে, যদি বেক্সিমকো গ্রিন সুকুকের পাবলিক সাবস্ক্রিপশন ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ডেট সিকিউরিটিজ) রুলস, ২৯২১ এর নিয়ম ১২ (২) অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরিমাণ আবেদন গ্রহণে সক্ষম না হয়, তাহলে পাবলিক সাবস্ক্রিপশন বাতিল করা হবে।

ডেবট সিকিউরিটিজ রুলসের ১২(২) ধারায় বলা হয়েছে, পাবলিক অফারের যেকোন সিকিউরিটিজে সাধারন বিনিয়োগকারীদের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ আবেদন জমা পড়তে হবে। এছাড়া আন্ডাররাইটারের (অবলেখক) ২০ শতাংশ আবেদনের পড়েও যদি ৫০ শতাংশের কম হয়, তাহলে ইস্যুটি বাতিল হবে।

প্রাথমিক পাবলিক অফারিং (আইপিও) শেয়ারের মাধ্যমে জনগণের কাছ থেকে ৭৫০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বেক্সিমকো।

কিন্তু, গতকাল পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৭.৪৩ শতাংশ পূরণ হয়। করণ, এটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৭২ টি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে মাত্র ৫৫.৭১ কোটি টাকার দর পেয়েছিল।

সুকুকের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য হবে ১০০ টাকা। আর ৫০ টি ইউনিট নিয়ে এর ন্যুনতম লট। এ হিসেবে এ লটের দাম ৫ হাজার টাকা।

এর আগে ২৫ জুলাই, বেক্সিমকো লিমিটেডের বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডাররা সবুজ সুকুক বন্ডের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়া চলে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত।

অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্য ও সরঞ্জাম ক্রয়ের অর্থায়নের জন্য ২ জুন বেক্সিমকো লিমিটেডের অনুকূলে ৩ হাজার কোটি টাকার সবুজ সুকুক বন্ড ইস্যু করার অনুমোদন দেয় বিএসইসি। সুকুক হলো, ট্রেজারি বন্ডের অনুরূপ একটি ইসলামিক আর্থিক দলিল, যা শরীয়াহ আইন মেনে চলে।

এ বন্ডের মেয়াদ পাঁচ বছর, যার মধ্যে বিনিয়োগকারীরা সুরক্ষিত বার্ষিক আয় হিসাবে ন্যূনতম ৯ শতাংশ লাভ পাবে।

কমিশনের বিবৃতি অনুযায়ী, ৩ হাজার কোটি টাকার তহবিলের অর্ধেক প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে, আর ৭৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে বেক্সিমকো শেয়ারহোল্ডারদের মাধ্যমে।

অবশিষ্ট ৫ হাজার ৫০ কোটি টাকা কমিশনের পাবলিক অফার নিয়ম মেনে একটি প্রাথমিক পাবলিক অফারের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।

কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, সুকুক থেকে সংগৃহীত তহবিল, বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানির দুটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান তিস্তা সোলার এবং কোরতোটোয়া সোলার নামের দুটি সৌর প্রকল্প এবং বেক্সিমকোর টেক্সটাইল বিভাগের সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রপাতিগুলোতে অর্থায়ন ও পুনঃঅর্থায়ন করতে খরচ করা হবে।