মেহেদী হাসান
মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কাটিয়ে দেশের অর্থনীতি আবারও সচল হতে থাকায় চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়েছে।
জুলাইয়ে এ খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৮.৩৮ শতাংশে, যা আগের মাসে ছিল ৮.৩৫ শতাংশ।
গত কয়েক মাস ধরেই ৮ শতাংশের কাছাকাছি ঘুরছিল ঋণের প্রবৃদ্ধি। কারণ, মহামারির কারণে ব্যবসায় নতুন বিনিয়োগের বিষয়ে খুব সতর্ক ছিলেন ব্যবসায়ীরা।
ঋণের প্রবৃদ্ধির এ পরিমাণ চলতি অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬.৪২ শতাংশ কম। ২০২১-২২ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১৪.৮ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতিতে বলা হয়, আগামী মাসগুলোতে ঋণের চাহিদা বাড়বে। কারণ, মহামারি নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সঙ্গে শিগগিরই অর্থনীতি আবারও সচল হবে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে ঋণের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে এবং আগামী মাসগুলোতে যখন বেশ কয়েকটি প্রণোদনা প্যাকেজের দ্বিতীয় ধাপ বিতরণ করা হবে, তখন তা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
যদিও, তিনি সতর্ক করেন, করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ যদি দেশে আঘাত হানে, তবে তা সামনের মাসগুলো অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে।
করোনার কারণে দূরাবস্থা কাটিয়ে অর্থনীতি আবারও সচল হওয়ায় ব্যাংকিং খাতের অতিরিক্ত তারল্য কিছুটা কমেছে।
জুলাইয়ে অতিরিক্ত তরল্য দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা, যা আগের মাসে ছিল ২ লাখ ৩২ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা। জুনে উদ্বৃত্ত তহবিলের পরিমাণ ছিল এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।
এ বিষয়ে মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাইল আর কে হুসাইন বলেন, ঋণের চাহিদা এখনও কম, কিন্তু আগামী মাসে এ চাহিদা কিছুটা বাড়বে। কারণ, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প খাতে ঋণ বাড়াতে চাপ দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাস সবকিছু স্থবির করে দেয়ায় গত অর্থবছরে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পায়। গত বছরের জুলাইয়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯.২০ শতাংশ এবং করোনার কারণে ঋণের চাহিদ কমে যাওয়ায় চলতি বছরের মে মাসে তা নেমে আসে ৭.৫৫ শতাংশে।