আরিফুর রহমান তুহিন
নতুন রপ্তানি বাজার খোঁজা আর স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উত্তোরণের পর বিদ্যমান বাণিজ্য সুবিধা বজায় রাখতে বিভিন্ন কূটনৈতিক চ্যানেলে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন, বিজিএমইএ।
এলডিসি উত্তোরণের পর বাণিজ্যিক সুবিধা হারানোর পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতির প্রভাব মোকাবেলার প্রস্তুতি নেয়াই এ পদক্ষেপের লক্ষ্য।
এ প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে ১০ জন রাষ্ট্রদূত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, ইতালি, মালদ্বীপ, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, ভারত, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনারদের সঙ্গে আলোচনা করেছে ফারুক হাসানের নেতৃত্বে নতুন বিজিএমইএ বোর্ড। এছাড়াও যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের হাইকমিশনারদের সাথেও তারা কথা বলেছেন তারা।
গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশে ইইউ রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তিরিঙ্কের সাথে প্রথম বৈঠক করে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন সবচেয়ে বড় বাণিজ্য ব্লক, যেখানে তৈরি পোশাকের প্রায় ৬২ শতাংশই রপ্তানি করে বাংলাদেশ।
২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৩১.৪৬ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। যার মধ্যে শুধু ইউরোপেই রপ্তানি হয়েছে ১৯.৪৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।
এলডিসি উত্তোরণের পর বাংলাদেশ ইইউ বাজারে বাণিজ্য সুবিধা হারাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, বিদ্যমান বাণিজ্য সুবিধাগুলো ধরে রাখতে আমরা আমাদের ইউরোপীয় অংশীদারদের সঙ্গে নিবিঢ়ভাবে কাজ করছি। যাতে জিএসপি প্লাস আর বিদ্যমান সুযোগগুলো ২০১৬ এর পরও বাড়ানো যায়।
এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিদেশে বাংলাদেশি মিশনের বাণিজ্যিক কাউন্সিলরদেরও আমরা যুক্ত করছি। যা বিদ্যমান বাণিজ্য সুবিধাগুলো বলবৎ রাখতে সহায়ক হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং এবং বাণিজ্যিক অংশীদারদের বাংলাদেশের বাণিজ্যের নানা সুবিধার পক্ষে কথা বলার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
এছাড়া, টেকসয়ীকরণ, ইইউ-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করার উপায় এবং পোশাক খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ-ইইউ’র মধ্যে আরও সহযোগিতা বাড়ানোসহ বাণিজ্যের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বাংলাদেশের আরএমজি শিল্পে বন্ধুত্বপূর্ণ সহায়তার জন্য রাষ্ট্রদূতদের ধন্যবাদ জানান।
এরপর ২ মে জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহোল্টজের সাথে একই বিষয়ে আলোচনা করে বাণিজ্য সংস্থাটি। আহ্বান জানানো হয়, বাংলাদেশের আরএমজি সেক্টরের জন্য তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখতে।
কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা এবং সবুজ উদ্যোগের ক্ষেত্রে পোশাক খাতের অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন পিটার। বাংলাদেশের আরও উন্নতি-অগ্রগতিতে সহায়তায় তার সরকারের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
দূত আরও বলেন, তিনি বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলবেন, যাতে নতুন রপ্তানি বাজার এবং আরও নতুন ক্রেতা খুঁজে পায়। জার্মানি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ।
জার্মানিতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪.৭৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫.৬১ বিলিয়ন ডলারের।