পুঁজিবাজারের বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলোকে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) যে উদ্যোগ নিয়েছে তার সুফল পাচ্ছে না রিং শাইন টেক্সটাইলের বিনিয়োগকারীরা।
লোকসানের কারণে ২০২০ সালের শেষদিকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়া রিং শাইন কোম্পানিকে টেনে তুলতে ২৭ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে পুরনো পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নতুন বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়।
এরপর আবার উৎপাদনের ফেরা নিয়ে আলোচনায় আসে কোম্পানিটি। দীর্ঘ দেড় বছরে কোম্পানিটির উৎপাদনে ফেরানোর নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি নেই।
রিং শাইনের পুনর্গঠিত বোর্ডের সদস্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক সগির হোসাইন খন্দকার দ্য বিজনেস পোষ্টকে বলেন, কোম্পানিটির আইপিও থেকে যে টাকা উত্তোলন করেছি তার একটি অংশ দিয়ে বিএসইসির অনুমতি সাপেক্ষে বেশ কিছু দেনা পরিশোধ করা হয়েছে। আরও অনেক দেনা পরিশোধ বাকি আছে।
এর আগে কোম্পানিটি কিনতে চেয়েছিল ইউনাইটেড গ্রুপ। তারা এখন বলছে নেবে না।
২০১৯ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি ২০২০ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা তাদের টাকা ফিরে পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে। এ পরিস্থিতিতে বিএসইসি ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে কোম্পানিটির আগের পরিচালকদের বাদ দিয়ে বোর্ড পুনর্গঠন করে।
আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিটি যে ১৫০ কোটি টাকা তুলেছিল, তার পুরোটাই ব্যাংকে রক্ষিত ছিল। সেখান থেকে বিএসইসির অনুমতিতে ৪০ কোটি টাকায় দেনা পরিশোধ করা হয়েছে।
কোম্পানিটি চালু করতে আরও টাকা চাওয়া হবে কিনা প্রশ্নের জবাবে সগির হোসাইন খন্দকার বলেন, যে টাকা দেয়া হয়েছিল সেগুলো ব্যবহৃত হয়েছিল। কিন্ত কোম্পানিটি পুরোপুরি চালু হয়নি, তাই আপাতত নতুন করে টাকা চাওয়ার উদ্যোগ নেই।
রিং শাইনের বিষয়ে বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ দ্য বিজনেস পোষ্টকে বলেন, রিং শাইন কোম্পানির ক্ষেত্রে আমরা দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছি, প্রথমত কোম্পানিকে পুরোদমে চালু করা, দ্বিতীয়ত যদি কেউ কোম্পানিটিকে নিতে চায় তাহলে সেটি হস্তান্তরের মাধ্যমে সচল করা।
তিনি আরও বলেন, অনেক গ্রুপই রিং শাইন কোম্পানিকে নিতে চায়। যাকেই দেয়া হবে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করেই দেয়া হবে।
রিং শাইন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির আগে টাকা ছাড়াই প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে যে ২৭ কোটির বেশি শেয়ার ইস্যু করে, সেগুলো পরিশোধিত মূলধন থেকে বাদ দেয়ার কথা জানায় বিএসইসি।
এ বিষয়ে শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিষয়টি একদিনে ঘটেনি। ফলে চাইলেই সব কিছুর সমাধান করা যাচ্ছে না। বিষয়টি আইনগতভাবে সমাধান করা হচ্ছে।
এ সময় বন্ধ থাকা এমারেল্ড অয়েল ও সিএন্ডএ টেক্সটাইল কোম্পানিকে উৎপাদনে ফেরাতে বোর্ড পুনর্ঘটন করা হয়। বর্তমানে দুটি কোম্পানিই উৎপাদনে আছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রিং শাইনের মোট শেয়ার রয়েছে ৫০ কোটি ৩ লাখ ১৩ হাজার ৪৩ টি। এর মধ্যে পরিচালকদের হাতে রয়েছে- ২১.৩২ শতাংশ আর প্রতিষ্ঠানের হাতে রয়েছে ১২.০৭ শতাংশ।
এছাড়াও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে এ কোম্পানির ১০.২৩ শতাংশ এবং বাকি ৫৬.৩৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
গত এক বছরে রিং শাইনের শেয়ারের সর্বোচ্চ দর উঠেছে ১৫.২০ টাকা এবং সর্বনিম্ন দর ছিল ৮.৫ টাকা। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৯.৮ টাকায়।