বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেভাবে রেল থেকে আয় করে থাকে, বাংলাদেশ রেলওয়েও বহুমুখী আয়ের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এটি ভর্তুকি দিয়ে চলছে। রেলের অনেক সম্পদ আছে। আমরা সেখান থেকে আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রেলের অপটিক্যাল ফাইবার লিজ দেয়া আয় বাড়ানোর কার্যক্রমের একটি অংশ।’
মঙ্গলবার রেলভবনে পাঁচটি কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের অপটিক্যাল ফাইবার লিজ চুক্তি অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘রেল জনগণের বাহন। জনগণকে জানানোর উদ্দেশ্যে, স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য আমরা প্রকাশ্যে চুক্তি করছি।’
নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘একটি দেশের ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য, টেকসই উন্নয়নের জন্য রেলখাতের উন্নয়ন জরুরি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা মন্ত্রণালয় করে দেওয়ার পরে আমরা সেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৪৭ সালে দেশভাগের পরে রেলওয়ের কোনো উন্নয়ন হয়নি। স্বাধীনতার সময় রেলখাত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু রেলকে পুনর্গঠন করেন। ৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো রেলের কোনো উন্নয়ন করেনি। ১০ হাজার রেলের কর্মকর্তা কর্মচারীকে হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে বিদায় করেছে। আমরা ভবিষ্যতে রেলের জমিসহ পণ্য পরিবহনের ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব আয় বাড়ানোর বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করছি।’
বাংলাদেশ রেলওয়ের দৈনন্দিন ট্রেন পরিচালনায় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুটি স্টেশনের মধ্যে লাইন ক্লিয়ারের তথ্য আদান-প্রদানে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়।
বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ১৯৮৪ সালে রেলের মাধ্যমে অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হয়। প্রাথমিকপর্যায়ে ১৯৯০ সালে ১৬০০ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হলেও বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত তিন হাজার ২০৫ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার পাঁচটি কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের মোট ১৭৭ কোটি ৩৯ রাখ ৮০ হাজার টাকার চুক্তি সই হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে সব ক্ষেত্রে চুক্তিপত্রে সই করেন চিফ সিগনাল ও টেলিকম কর্মকর্তা বেনুরঞ্জন সরকার। বাহন লিমিটেডের পক্ষে স্বাক্ষর করেন সাঈদ সামিউল হক, এম ডি বাহন লিমিটেড।
সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের পক্ষে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলি মুর্তজা খান। বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনের পক্ষে এরিক আস এমডি ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার।
এছাড়া রবির পক্ষে পেরিহেম এলহামি চিফ টেকনিক্যাল অফিসার। ফাইবার লিমিটেডের পক্ষে রাজীব আহমেদ সুলতান, চিফ মার্কেটিং অফিসার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর। এসময় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদারসহ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।