প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

নেই কোল্ড স্টোরেজ, দুর্গম পথে চলে চাঁদাবাজি

লোকসানের শঙ্কায় রাঙামাটির জাম্বুরা চাষিরা

০৮ নভেম্বর ২০২১ ১৬:৪৬:০৭ | আপডেট: ৩ years আগে
লোকসানের শঙ্কায় রাঙামাটির জাম্বুরা চাষিরা

জিয়াউর রহমান জুয়েল, রাঙামাটি

কোল্ড স্টোরেজ ও ভালো পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় রাঙামাটির জাম্বুরা চাষি ও পাইকারি বিক্রেতারা রয়েছেন সমস্যায়। এতে লেবুজাতীয় এ ফলটি বিক্রিতে চলতি মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত লাভ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তারা।

পাইকারি বাজারে ফলটির দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম হওয়ায় এবার ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

অন্যদিকে, দুর্গম পথের বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজির কারণে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কাঙ্ক্ষিত লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

গত বর্ষায় কম বৃষ্টি হলেও ফলন ভালো হওয়ায় রাঙামাটির ১০টি উপজেলার কৃষকদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান জাম্বুরা নতুন আশার সঞ্চার করে।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) সূত্রে জানা গেছে, এ জেলায় চলতি মৌসুমে জাম্বুরার বিক্রির পরিমাণ প্রায় ২০ কোটি টাকা হতে পারে।

যদিও, কম বৃষ্টিপাতের কারণে ফলটির আকার এবার অন্য বারের চেয়ে ছোট হয়েছে।

ডিএই কর্মকর্তারা জানান, আগস্ট-সেপ্টেম্বর মৌসুমে রাঙামাটির দশটি উপজেলায় ১ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে জাম্বুরা চাষ করা হয়েছে। তারা বলেন, রাঙামাটির পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত জাম্বুরা প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ও অন্যান্য জাতের তুলনায় মিষ্টি হওয়ায় সারাদেশে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

রাঙামাটি সদর, বেলাইছড়ি, বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাইছড়ি, রাজস্থলী, কাপ্তাই, লংগাডু, নানিয়ারচর ও কাউখালী উপজেলা এবং জেলার মাইনী, জুরাছড়ি, সুভলং, মারিশ্যা এলাকার চাষিরা সমতঘাটে অবস্থিত হাটে এসে তাদের উৎপাদিত ফল বিক্রি করেন। পরে তা ট্রাকে বোঝাই করে পাইকারি বিক্রেতা ও মজুদদাররা পাঠিয়ে থাকেন চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্তে।

রাঙামাটিতে কোল্ড স্টোরেজ না থাকায় পচনশীল ফলটি সংরক্ষণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানান কৃষকরা।

প্রতি ১ হাজার জাম্বুরা ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, পরিবহন খরচের জন্য ফলের দাম বেড়ে যায়। কারণ, তাদের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে ফল সংগ্রহ করতে হয়, যেখানে উপযুক্ত পরিবহনও পাওয়া যায় না।

সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে টোল দিতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

এক জাম্বুরা ব্যবসায়ী দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, এ বছর উৎপাদন ভালো হলেও পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত লাভ হচ্ছে না।

ওই ব্যবসায়ী জানান, প্রতিটি তল্লাশি চৌকিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতি ট্রাকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা দাবি করে। তিনি বলেন, আমাদের ফল বোঝাই ট্রাকে প্রতি ট্রিপে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ করতে হয়।

রাঙামাটির জাম্বুরা ব্যবসায়ী মো: সোহেল জানান, চলতি মৌসুমে রাঙামাটির ব্যবসায়ীরা সারাদেশে প্রতিদিন প্রায় দুই লাখ জাম্বুরা সরবরাহ করছেন। ফলের দাম ৫ টাকা থেকে ২০ টাকা।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, কৃষকরা প্রতি হেক্টরে ১২ টন জাম্বুরা পাচ্ছেন।

এ বছর উৎপাদন ভালো হয়েছে জানিয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, যাতে তারা আগামী মৌসুমে আরও ভালন পেতে পারেন।