প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

সিলেটে যুবকদের ৪ বিষয়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১১:১৯:৪৭ | আপডেট: ৩ years আগে
সিলেটে যুবকদের ৪ বিষয়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ

তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ জনগোষ্ঠী হিসেবে তৈরির লক্ষ্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশন, সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশ এবং শেভরন বাংলাদেশ অতি সম্প্রতি একটি চুক্তিনামা স্বাক্ষর করেছে।

এ চুক্তিনামার আওতায় সুইসকন্ট্যাক্টের উত্তরণ প্রকল্প সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাথে পার্টনারশিপের ভিত্তিতে সিলেট শহরে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্যে কাজ করবে।

এ পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) উদ্যোগ বাংলাদেশ সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি ২০১১ অর্জনের ক্ষেত্রে সরাসরি ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। সুইসকন্ট্যাক্টের উত্তরণ প্রকল্প এ চুক্তির আওতায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের একটি বিদ্যমান অবকাঠামোকে আধুনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রূপান্তরিত করবে।

প্রাথমিক অবস্থায় চালু হবার পর এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১২০০ যুবাকে চারটি বিষয়ে (ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বিং পাইপ ফিটিং, ওয়েল্ডিং এবং হাউসকিপিং) প্রশিক্ষণ প্রদান করা সম্ভব হবে, যেগুলোর শ্রমবাজারে যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।

অনুষ্ঠানটি ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশমের মেয়র আরিফুল হক, শেভরন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার, শেভরন বাংলাদেশের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক ইমরুল কবির এবং সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মুজিবুল হাসান।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক বলেন, দক্ষ কর্মীর অভাব বর্তমানে আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি। দুর্ভাগ্যক্রমে, এর ফলস্বরূপ, আমরা আমাদের প্রতিযোগীদের কাছে ব্যবসা হারাচ্ছি। এই সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি এবং বাজারে দক্ষতার নিত্য পরিবর্তনশীল চাহিদা সফল ভাবে পূরণ করা। আমি বিশ্বাস করি এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কাজ করে, আমরা সফল পাবলিক-প্রাইভেট-পার্টনারশিপের জন্য একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করতে সক্ষম হব এবং অন্যদের জন্য রোল মডেল হতে পারব।

শেভরন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার বলেন, কারিগরি এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অসংখ্য উৎসাহী তরুণের কর্মজীবনের পথ সুগম হবে, এর মাধ্যমে তারা নিজেদের এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘ মেয়াদী ও টেকসই উন্নতি নিশ্চিত করতে পারবে। সমাজে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে সমাজের সদস্যদের জন্য শিক্ষা এবং চাকরির সংস্থানের ভূমিকা অনস্বীকার্য। উত্তরণ প্রকল্পের সময়কাল শেষ হওয়ার পরেও প্রকল্পের মাধ্যমে আনীত পরিবর্তন যাতে দীর্ঘমেয়াদে সংশ্লিষ্ট কমিউনিটি সদস্যদের উপকারে আসে সেটা নিশ্চিত করাই এই চুক্তির লক্ষ্য।

সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মুজিবুল হাসান বলেন, সুইসকন্ট্যাক্ট তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিশ্বাস করে যে দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং আর্থিক সেবায় অন্তর্ভুক্তিকরণের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে দারিদ্রের শিকল থেকে মুক্ত করা সম্ভব আর উত্তরণ প্রকল্প আমাদের সেই বিশ্বাসকে সমুন্নত রাখার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ।

এ মুহূর্তে, বাংলাদেশের মোট ৪.৪ মিলিয়ন জনগোষ্ঠী অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয় রয়েছে এবং আমাদের শ্রমশক্তি প্রতি বছর ১.৩ মিলিয়ন হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে, কর্মরত রয়েছে ৬০.৭ মিলিয়ন জনগোষ্ঠী। সুতরাং, জনসংখ্যার এক বিশাল অংশ বেকারত্বের অভিশাপে ভুগছে, এবং কোভিড অতিমারীর কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

উত্তরণ- উন্নত জীবনের লক্ষ্যে, একটি তিন বছরের প্রকল্প যা সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশ বর্তমানে সিলেট ও ঢাকা বিভাগে বাস্তবায়ন করছে। শিগগিরেই এর কাজ খুলনায় সম্প্রসারিত করতে চলেছে।

একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ছাড়াও, প্রকল্পটির লক্ষ্য ২০০০ যুবাকে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মানের উন্নত ওয়েল্ডিং প্রশিক্ষণ চালু করা।

এছাড়াও বাংলাদেশে প্যাকেজিং শিল্পের চাহিদা পূরণের জন্য উত্তরণ প্রকল্প ‘প্যাকেজিং এবং ফিনিশিং অপারেশন’ নামে একটি নতুন ট্রেড চালু করেছে যা ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল স্কিলস ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (এনএসডিএ) কর্তৃক যাচাই করা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীনে।