প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

৩০-৩১ জানুয়ারি কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে কর্মবিরতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:৪৬:৫৭ | আপডেট: ২ years আগে
৩০-৩১ জানুয়ারি কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে কর্মবিরতি

কাস্টম এজেন্ট লাইসেন্সিং বিধিমালা সংশোধন, সিপিসি ও এইচএস কোড সংক্রান্ত ভুলের কারণে ২০০ থেকে ৪০০ শতাংশ জরিমানা রহিতসহ বিভিন্ন দাবি মেনে না নেয়ায় ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে দুই দিনের কর্মবিরতি পালন করা হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠানো এক চিঠিতে এ ঘোষণা দিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন।

কাস্টমস এজেন্টস লাইসেন্সিং বিধিমালা ২০১৬ ও ২০২০-তে সিএন্ডএফ এজেন্ট এর মৌলিক অধিকার পরিপন্থী বিধি যুক্ত আছে বলে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস এসোসিয়েশন। বারবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ জানানো হলেও বাজেটে কোন ধরণের সংশোধনী আনা হয়নি। এর প্রতিবাদে আগামী ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি সারাদেশের সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে কর্মবিরতি পালন করা হবে।

রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছে ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. সুলতান হোসেন খান। এসময় সংগঠনের সভাপতি শামছুর রহমান সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কাস্টমস এজেন্ট লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০১৬ জারীর পর ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বারবার প্রয়োজনীয় সংশোধনের জন্য অনুরোধ জানানো হলেও তা আমলে নেয়া হয়নি। এর পর কাস্টমস এজেন্ট লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ প্রণয়নের সময়েও ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হলেও তা গুরুত্ব না দিয়েই বিধি জারী করা হয়েছিল।

সংগঠনটির দাবি, এমতাবস্থায় দেশের সব সিএন্ডএফ এজেন্টদের মৌলিক অধিকার খর্ব হওয়ায় এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে প্রস্তাবণায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য লাইসেন্সিং রুলের কয়েকটি বিধি ও উপ-বিধি সংশোধনীর প্রস্তাব দেয়া হলেও বাজেট প্রস্তাবনায় কোন সংশোধনী আনা হয়নি।

আরও জানানো হয়, লাইসেন্স নবায়ন না করা প্রসঙ্গে লাইসেন্সিং বিধিমালা ২০১৬ ও ২০২০ তুলে ধরে সংশোধন প্রস্তাবনায় বিধিটি বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছিল। লাইসেন্স হস্তান্তর প্রসঙ্গে লাইসেন্সিং বিধিমালা ২০১৬ বিধি ১৩(গ) ও লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ বিধি ১৯(গ)(ঘ) উল্লেখ করে সংশোধনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বৈধ উত্তরাধীকারীর অনুকূলে লাইসেন্স হস্তান্তরের ক্ষেত্রে বিধিমালার অধীন শিক্ষাগতযোগ্যতা যাচাই শিথিল করা এবং সংশ্লিষ্টশুল্কভবন বা স্টেশনের লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করে বৈধ উত্তরাধীকারীর কাছে লাইসেন্স হস্তান্তর করা।

সুলতান হোসেন খান জানান, লাইসেন্স বাতিল ও অর্থদন্ড আরোপ প্রসঙ্গে লাইসেন্সিং বিধিমালা ২০১৬ বিধি ২১(১)(১০) ও লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ বিধি ২৩(১)(ঞ) তুলে ধরে প্রস্তাবনায় বলা হয়, সিএন্ডএফ এজেন্টের উপর প্রযোজ্য কোন শুল্ক-কর পরিশোধ না করিলে। এছাড়া রেফারেন্স লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ বিধি ২৩(৪) উল্লেখ করে প্রস্তাব করা হয়, মূল লাইসেন্স বাতিল হলে রেফারেন্স লাইসেন্স বাতিল না করা।

তিনি জানান, শুল্ক মূল্যায়ন বিধিমালা-২০০০ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এইচএস কোড ও সিপিসি ভুলের কারনে জরিমানা আরোপ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ ও বিধি-বিধান বাতিল করণ। অযৌক্তিক কারনে সিএন্ডএফ এজেন্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ঊত্থাপন করে লাইসেন্সিং বিধিমালা ও কাস্টমস আইন ১৯৬৯ এর ধারা ২০৯ মোতাবেক কাজ না করে এবং সিএন্ডএফ এজেন্টদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ বা শুনানির সুযোগ না দিয়েই এআইএন লক করা বা লাইসেন্স বাতিল করা বা কোন দোষ প্রমানিত না হলেও জরিমানা আরোপের মতো নিবর্তনমূলক কাজ বন্ধ করা। আমদানিকারকদের নিকট পাওনা অনাদায়ীথাকার কারণে সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স স্থগিত রাখা যাবে না।

তিনি উল্লেখ করেন, আমদানি-রপ্তানি পণ্য চালান খালাসকালে কায়িক পরীক্ষা সম্পাদিত হয় নাই অথবা প্রথমবার কায়িক পরীক্ষঅ সম্পাদনকালে কোন পণ্য চালানে ঘেষণা বহির্ভূত পণ্য পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে সিএন্ডএফ এজেন্টদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ঘোষণার অভিযোগ ঊত্থাপন করা যাবে না। শুধুমাত্র আমদানিকারক ও শিপিং এজেন্টের বিরুদ্ধে মিথ্যা ঘোষণার অভিযোগ ঊত্থাপন ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা।

রাজস্ব আহরণ নির্বিঘ্ন রাখার স্বার্থে এনবিআরকে দ্রুতই এই দাবিগুলো নিয়ে যৌথ সভা আহ্বান করে আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি। উল্লেখ্য, এর আগেও দাবি না মানায় গত বছরের ৭ জুন সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করেছিলো এসোসিয়েশন।