ই-কমার্স প্লাটফর্ম থেকে কোরবানির গরু কিনে প্রতারিত হয়েছেন খোদ বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি অনলাইনে গরু বেচাকেনা উদ্বোধনকালে প্রথম ক্রেতা হিসাবে যে গরু অর্ডার দিয়েছেন তা শেষ পর্যন্ত পাননি। তবে পরবর্তীতে মন্ত্রীকে কম দামে অন্য গরু ধরিয়ে দেয় ওই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি।
রোববার বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন (বিসিসি) এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত “প্রতিযোগিতা আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে ইআরএফ এর ভূমিকা” শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন বাণিজ্য মন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, গত কোরবানি ঈদে একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান উদ্বোধনকালে একটি গরুর জন্য এক লাখ টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে যে গরুটি দেখিয়েছিল, সেটি আমি পাইনি। আমি নিজেই অর্ডার করে প্রতারিত হয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, পরে আমাকে অন্য আরেকটি গরু ৮৭ হাজার টাকা এবং ১৩ হাজার টাকায় একটি ছাগল দিয়ে ছিল। এটি না দিলে হয়তো তখন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যেত।
মন্ত্রী বলেন, কোনো কিছু নতুন করে চালু করলে সমস্যার সৃষ্টি হয়। তার ভুক্তভোগী আমি নিজেই। আমার মতো অনেকেই না বুঝে ই-কমার্সে বিনিয়োগ করেছেন। ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। প্রথম বার সমস্যা হলেও পরের বছর ই-কমার্সে গরু কেনাকাটায় সমস্যা হয়নি।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে সঠিক আইনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য আইন ও নীতিমালা সংশোধন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কারণ বিদ্যমান আইনে এর শাস্তি কম এবং জামিন যোগ্য অপরাধ বলে জানান মন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ই-কমার্স বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রচার মাধ্যম তথা সাংবাদিকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল বাণিজ্য বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই। গুটিকয়েক অসৎ প্রতিষ্ঠানের কারনে ই-কমার্স বন্ধ করে দেয়ার সুযোগ নেই। করোনাকালীন ই-কমার্স ভোক্তাদের সেবায় কাজ করে সুনাম অর্জন করেছে। সরকার যথাযথ আইন প্রনয়ণ করে সুশৃঙ্খলভাবে ই-বাণিজ্য পরিচালনা করার জন্য কাজ করছে।
টিপু মুনশি বলেন, ই-কমার্স সম্পর্কে মানুষের ধারনা পরিষ্কার থাকা প্রয়োজন। এ জন্য মানুষের সচেতনতা বাড়াতে হবে। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে এবং ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মানুষকে প্রতারিত করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি নতুন প্রতিষ্ঠান। বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এটি নির্দিষ্ট আইনের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। এ কমিশনের জনবল এবং সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা আছে। এ কমিশনকে শক্তিশালী করতে সরকার কাজ করছে। এ কমিশন প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে স্বপ্রনোদিত ভাবে অনেক বিষয়ে তদন্ত করে এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। বিশ্বের অনেক দেশেই বাণিজ্য ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে প্রতিযোগিতা কমিশন কাজ করছে। সবার সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন শক্তিশালী হবে।