পুঁজিবাজারে অন্যান্য লেনদেনের মতোই একই পদ্ধতিতে বন্ড লেনদেন হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ২০ দিনে মাত্র ৮টি লেনদেন হয়েছে। কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা গেছে- চাহিদা ও যোগানের মধ্যে একটা গ্যাপ রয়েছে৷ এছাড়াও সঠিক প্রচারণার মাধ্যমে এর চাহিদা তৈরি করা যায়নি৷
বুধবার “স্টক এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মে সরকারী সিকিউরিটিজ এবং ট্রেডিং সম্পর্কিত বিষয়ের” ওপর এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে পণ্য বৈচিত্রতা আনয়নে কাজ করছে বর্তমান কমিশন৷ এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জে সরকারি সিকিউরিটিজ লেনদেনের ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের (অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, স্টক এক্সচেঞ্জ, সিডিবিএল) সাথে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে৷
সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সরকারি সিকিউরিটিজ বিনিয়োগের একটা সুরক্ষিত মাধ্যম, তাই সবাই তাদের পোর্টফোলিওর একটা অংশ সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করে। যেন পোর্টফোলিওর একটা অংশ লস হলেও এই বিনিয়োগ সুনিশ্চিত থেকে যায়। আগে আমাদের পুঁজিবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজ না থাকায় দেশের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ঝুঁকি অনেক বেশি ছিল।
তিনি আরও বলেন, প্রথম দিনের লেনদেনের পরেই বিও আইডি দিয়ে লেনদেন করতে হলে বিএসইসি ও ডিএসই(ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ)'র অনুমোদন নিতে হবে- বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। যার আসলে কোন ভিওি নেই৷
বিএসইসি কমিশনার বলেন, পুঁজিবাজারের অন্যান্য লেনদেনের মতই একই পদ্ধতিতে বন্ডে লেনদেন হয়। চাহিদা তৈরির জন্য আমাদের অনেক প্রচারণামূলক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। বাংলাদেশে ব্যাংকের দেয়া একটা বন্ড ব্যর্থ হওয়ার কোন কারণ নেই৷ এটা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সঠিক প্রচারণার মাধ্যমেই বুঝাতে হবে৷
এর আগে গত ১০ অক্টোবর ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ৮০ মিলিয়ন টাকা বাজার মূলধন নিয়ে ডিএসই’র ট্রেডিং প্লাটফর্মে ২-২০ বছর মেয়াদী ২৫০টি সরকারি সিকিউরিটিজ লেনদেনের সিস্টেম বেইজড ট্রায়াল ট্রেডিং শুরু হয়।
ডিএসই’র চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম. সাইফুর রহমান মজুমদার, এফসিএ বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক এম আনোয়ার হোসেন, সিডিবিএল-এর মহাব্যবস্থাপক মাইনুল হক এবং ডিএসই’র প্রোডাক্ট এন্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান সাইদ মাহমুদ জুবায়ের৷
ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম. সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, সরকারি সিকিউরিটিজ লেনদেনের জন্য একটা টেকনিক্যাল প্লাটফর্ম দাঁড় করানো হয়েছে। যা ডেট বোর্ডে পরিপূর্ণ। সরকারি সিকিউরিটিজগুলো মূলত ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধারণ করছে। তারাই বাংলাদেশ ব্যাংকের প্লাটফর্মে কেনাবেচা করছে৷
ডিএসই’র চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুসুর রহমান বলেন, আর্থিক খাতের উন্নয়ন করতে না পারলে দেশের টেকসই উন্নয়ন কঠিন হয়ে পড়বে। তবে আশার কথা হচ্ছে- বর্তমানে আমাদের যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা রয়েছে তারা অত্যন্ত গতিশীল ও কর্মতৎপর, তারা নতুন নতুন প্রোডাক্ট বাজারে নিয়ে আসার চেষ্টার পাশাপাশি অনেক ভাল কাজ করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক এম. আনোয়ার হোসেন বলেন, সরকারি সিকিউরিটিজ লেনদেনের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরণের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা শুরু করুন তাহলেই এই প্লাটফর্মে সরকারি সিকিউরিটিজের ব্যাপকতা ও প্রসারতা বৃদ্ধি পাবে।