ঈদের আগে রাজধানীর বাজারগুলোতে গরুর মাংসের দাম আবারও বেড়েছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে কেজিতে ৫০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মাংসের দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭২০ টাকায়। অথচ একদিন আগেও ৬৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাড়তি দামে অস্বাভাবিক মুনাফা করেছে ব্যবসায়ীরা। মাংসের দাম সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা কেজি হওয়া উচিৎ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিক্রেতারা দ্য বিজনেস পোস্ট’কে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা ৬৫০ টাকায় বিক্রি করেছে। যে বাজারে ব্যবসায়ী সমিতির দোকান রয়েছে সেখানে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে অন্য দোকানগুলো ৬৮০ টাকায় বিক্রি করছেন। অন্যদিকে, যে বাজারে ব্যবসায়ী সমিতির কোন দোকান নেই, সেখানে ৭০০ টাকা কেজির দরে মাংস বিক্রি হচ্ছে আগে থেকেই।
গতকাল রাজধানীর মুগদা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, সালাম এন্টারপ্রাইজসহ বাজারের কয়েকটি দোকানে ৬৮০ টাকা কেজি মাংস বিক্রি হচ্ছে। সেগুনবাগিচা ও মালিবাগ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতিরি সহ-সভাপতি ও সালাম এন্টারপ্রাইজের মালিক আব্দুস সালাম দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, গত ৫ এপ্রিল দক্ষিণ সিটি করর্পোরেশনের মেয়রের সঙ্গে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির একটি বৈঠক হয়েছে। মেয়রের কাছে ৬৫০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। তবে সেটা ২৬ রোজা পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার সেই প্রতিশ্রতি শেষ হয়েছে। এরপর থেকেই দাম বাড়িয়ে ৬৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। ঈদের আগের দিন আরও ২০ টাকা বাড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এক লাখ টাকা দিয়ে গরু কিনলে তাতে ১৪৫-১৫০ কেজি মাংস পাওয়া যায়। গরু হাট থেকে বাজারে এনে বিক্রি করা পর্যন্ত ২-৩ হাজার টাকা খরচ হয়। ফলে প্রতিটি গরুর দাম পড়ে প্রায় এক লাখ ২-৩ হাজার টাকা।
পরবর্তীতে প্রতি কেজি মাংস ৭০০ টাকায় বিক্রি করলে ব্যবসায়ীরা দেড় হাজার থেকে সবোর্চ্চ ৫ হাজার টাকা মুনাফা পান। এছাড়া নলা, কলিজা, মাথা ও চামড়া বিক্রি করে আরও ৮-১০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। অর্থাৎ একটি গরুর মাংস বিক্রি করে ব্যবসায়ীদের মুনাফা থাকে প্রায় ১২ থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা।
রাজধানীর ঝিগাতলা, মোহাম্মদপুর, মালিবাগসহ বিভিন্ন বাজারে অনেক ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা প্রতিদিন ৩-৪টি গরুর মাংস বিক্রি করতে পারেন। সে হিসেবে তাদের মুনাফার পরিমাণও বেশি থাকে।
কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা অনুসারে মাংসের দাম ৪৫০-৫০০ টাকা হওয়া উচিৎ। ব্যবসায়ীরা এখন যেটা নিচ্ছে বা যে হারে মুনাফা করেছে তা অস্বাভাবাবিক।