ভারত থেকে আমদানি করা চাল খালাস আবারও স্থগিত করা হয়েছে। এ নিয়ে ৪ মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো জিটুজি চুক্তির আওতায় আমদানি করা নিম্নমানের ভারতীয় চালের খালাস স্থগিত করা হলো।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের ৩ নম্বর জেটিতে এমভি বিএনসি আলফা জাহাজে আসা চালানটিতে এই নিম্নমানের চাল ধরা পড়ে। ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে দেশটির কোম্পানি নেকফ ইন্ডিয়া চালানটি পাঠিয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের আগস্টে একই প্রক্রিয়ায় ভারত থেকে আমদানি করা চালের খালাস একই কারণে স্থগিত করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম খাদ্য অধিদপ্তরের চলাচল ও স্টোরেজ নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল কাদের বলেছেন, এমভি বিএনসি আলফা প্রায় ৭ হাজার ৬০০ টন চাল পরিবহন করেছে। যার মধ্যে ৭০০ টন আনলোড করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার কিছু নিম্নমানের চাল পাওয়া গেছে। এরপরই খালাস স্থগিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চালের নমুনা পরীক্ষার জন্য খাদ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। আনলোডিং আবার শুরু হবে কিনা তা রিপোর্ট পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এই জাহাজ থেকে খালাস হওয়া ৭০০ টন চাল দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০টি গুদামে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
একটি যৌথ দল দ্বারা নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষাসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে গত সপ্তাহে জাহাজটি বন্দরের বর্হিবন্দরে পৌঁছায়। এরপর বুধবার জাহাজটিকে জেটিতে নোঙর করার অনুমতি দেওয়া হয়।
কাদের বলেন, চালানটির কিছু চাল বিবর্ণ হয়ে গেছে এবং কয়েক মাস গুদামে রাখলে চালের গুণমান আরও খারাপ হবে। সে কারণে এই চাল খালাস করা যায় না।
তিনি বলেন, যে চাল ভালো তা গ্রহণ করা যাবে, তবে সিদ্ধান্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নেবেন।
খাদ্য কর্মকর্তারা জানান, আমদানি চুক্তি অনুযায়ী চালের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে তা ফেরত দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরবরাহকারীরা।
জাহাজটির স্থানীয় এজেন্ট আবুল হোসেন জানিয়েছেন, শুক্রবার জাহাজটি অচল হয়ে পড়ে। এটি জেটিতে থাকবে নাকি বহির্নোঙরে পাঠানো হবে তা বন্দর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।
এর আগে আগস্টে এমভি ড্রাগনের মাধ্যমে আসা প্রায় ১৯ হাজার ২০০ টন চাল গ্রহণ করা হয়নি। ৩ আগস্ট জাহাজটি জেটিতে উঠে।
প্রায় ৪ হাজার টন চাল আনলোড করে দেশের বিভিন্ন জেলার গুদামে পাঠানো হলেও তা নিম্নমানের হওয়ায় কর্মকর্তারা গ্রহণ করতে রাজি হননি।
এরপর থেকেই জাহাজটি পরিদর্শন ও অন্যান্য প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষা করছে।
চলতি বছর জিটুজি চুক্তির আওতায় ভারত থেকে দেড় লাখ টন চাল আমদানি করছে খাদ্য অধিদপ্তর। আমদানিকৃত এসব চাল খালাসের আগে পরীক্ষা করা হয়, এগুলো ভালো অবস্থায় আছে কি না।
কিন্তু খাদ্য কর্মকর্তারা বলছেন, পুরো চালান যাচাই করা সম্ভব নয় এবং উপরের দিকের সামান্য অংশই পরীক্ষা করা হয়।