প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

বাড়তে পারে আরও

এক যুগে চায়ের দাম বেড়েছে ১০৮ শতাংশ

রোকন উদ্দীন
২৮ আগস্ট ২০২২ ১৯:৩১:০২ | আপডেট: ২ years আগে
এক যুগে চায়ের দাম বেড়েছে ১০৮ শতাংশ

জরুরি খাদ্য পণ্য না হলেও দেশে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে চায়ের দাম। গত এক যুগে চায়ের দাম বেড়েছে ১০৮ শতাংশেরও বেশি। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে খোলা চায়ের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, কিছুদিনের মধ্যে দাম আরো বাড়তে পারে। বিভিন্ন ব্র্যান্ড কোম্পানির ডিলার ও সরবরাহকারীরা দোকানগুলোতে এমনই আভাস দিয়েছেন।

রাজধানীর বাজারগুলোতে সাধারণ মানের খোলা চা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪৫০ টাকা কেজি দরে। ভাল মানের চায়ের দাম ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা। এছাড়া প্যাকেটজাত চায়ের মধ্যে দেশিয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডগুলোর ৪০০ গ্রামের সাধারণ ব্ল্যাকটি’র প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকায়। ব্ল্যাকটি’র ৫০ পিসের টি ব্যাগের প্যাকেট পাওয়া যাচ্ছে ৯০-১৪৫ টাকায়।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১ সাল শেষে খোলা চায়ের গড় দাম ছিল ৪৬৩ টাকা কেজি। যা তার এক যুগ আগে ২০১০ সালে এই মানের চায়ের দাম ছিল ২২২ টাকা কেজি। সে হিসেবে খোলা চায়ের দাম বেড়েছে ১০৮ শতাংশের কিছু বেশি। এই সময় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেট চায়ের দাম বেড়েছে ১০০ শতাংশ। ২০২১ সাল শেষে প্যাকেটজাত চায়ের দাম ছিল প্রতি কেজি ৫৩৫ টাকা। যা ২০১০ সালে ছিল ২৬৮ টাকা কেজি। দাম বৃদ্ধির সিংহভাগই হয়েছে গত ছয় বছরে।

দেশের ইস্পাহানি, কাজী এন্ড কাজী, সিলন, ফিনলে, বেঙ্গল, হালদাভ্যালী, ড. এইচ এন্ড এইচ, ফ্রেশ, একমি, জিলক্যাফে, তাজাসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চা পাওয়া যায়। প্রতিটি ব্র্যান্ডেরই আবার ৫-১০ ধরনের চা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে- ব্ল্যাক টি, গ্রীন টি, মসলা টি, লেমন টি, ওয়াইট টি, ব্লেন্ড টি, অর্গানিক টি, হারবাল টি, রেড ডাস্ট, অর্জুন টি, তুলসি টি, মসলা টি ইত্যাদি। ব্ল্যাক ও গ্রীন টিকে আবার নানা মোড়কে বাজারজাত করছেন কোম্পানিগুলো। পলিব্যাগ, ব্যাগ ইন ব্যাগ, পাটের ব্যাগ, প্লাস্টিকের জার ইত্যাদি নানা রকম মোড়কে চা পাওয়া যায়। দেশিয় কোম্পানি ছাড়াও ভারত, শ্রীলংকাসহ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানি করা টাটা, টেটলি, টুইনিং অব লন্ডন, ডিলমা ইত্যাদি ব্র্যান্ডের চায়ের প্যাকেটও পাওয়া যায় দেশের বাজারগুলোতে।

বাজার ঘুরে ও বিভিন্ন বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের চা সরবরাহকারীরাই চায়ের দাম আরও বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। এক্ষেত্রে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে তাদেরকে জানানো হয়েছে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারের আল্লাহর দান স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মোস্তাফিজুর রহমান সিফাত বলেন, ‘একটি নামি দামি ব্র্যান্ড কোম্পানির সরবরাহকারী আমাকে জানিয়েছে, প্রতি ১০০ গ্রাম চায়ের প্যাকেটে ১০ টাকা ও ৪০০ গ্রামের প্যাকেটে ৪০০ টাকা বাড়তে পারে। কেন বাড়ানো হবে তা জানানো হয়নি তবে মনে হয় শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর আলোচনার সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে।’

চায়ের দরদাম:

বাজারে কাজী এন্ড কাজীর জেসমিন গ্রীন টির ৬০ গ্রামের ব্যাগ ইন ব্যাগের প্যাকেটের দাম ১৮০ টাকা, গ্রীন লেমন গ্রাস ৪০ পিসের টি ব্যাগের দাম ১৯০ টাকা। দেশের অন্যতম বড় চা বাজারজাতকারী ইস্পাহানি মির্জাপুর ব্র্যান্ডের ব্লেন্ড চয়েস প্রিমিয়াম গ্রীন টি ব্যাগের ৭০ গ্রামের (৫০পিস) প্যাকেটের দাম ২০০ টাকা, ৩৪০ গ্রামের প্লাস্টিকের জারের দাম ২০০ টাকা, জেরিন প্রিমিয়াম ব্ল্যাকটি’র ৪০০ গ্রামের প্যাকেট ২৫০ টাকা, রেড ডাস্ট টি’র ৪০০ গ্রামের প্যাকেট ১৮০ টাকা। ড. এইচ এন্ড এইচ ব্র্যান্ডের বিভিন্ন রকম হারবাল চা পাওয়া যায়। এই ব্র্যান্ডের ৫০-৮০ গ্রামের প্যাকেটে লেমন মসলা চা ১৫০ টাকা, তুলসি ও ত্রিফলা চা ১৬০ টাকা, অর্জুন চা ৩৪৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। দেশের অন্যতম চা ব্র্যান্ড হালদা ভ্যালিরও বেশ কয়েক রকম চা বাজারে পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে- সিলভার নিডেল হোয়াইট টি’র ৪০ গ্রামের দাম ৪২৫ টাকা, গোল্ডেন আইব্রো ব্ল্যাকটি’র ৫০ গ্রামের দাম ৩৪৫ টাকা, ড্রাগন ওয়েল গ্রীন টি’র ১২ গ্রামের দাম ১০৫ টাকা।