নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বাজার অস্থিতিশীল করা এসএমএস চক্রের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান।
শনিবার বেলা ১১টায় বরিশালের ফরিয়াপট্টি, চকবাজার এলাকার পাইকারি বাজার পরিদর্শন করেন ভোক্তার ডিজি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় তিনি এ কথা জানান।
শফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘উত্তরবঙ্গে চালের বড় বড় কয়েকশ কল রয়েছে। তারা কীভাবে জোটবদ্ধ হয়? তাহলে এখানেও ডিম, ব্রয়লার মুরগির মতো এসএমএস’র মাধ্যমে গোটা চালের বাজার অস্থির করে দেওয়া হয়। আর এটা যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিটি উপজেলা ও জেলায় ব্যবস্থা নেব।’
তিনি বলেন, ‘মোকামে চালের দাম বাড়ানোর পেছনে একটি চক্র ‘‘সারা দেশে ধানের দাম বেড়েছে’’ বলে প্রচার করেছে। ধানের দাম যদি বেড়েও থাকে সেই চালটা তো দুই মাস পরে অর্থাৎ বৈশাখ মাসে বাজারে আসবে। কিন্তু এখন ১৫-২০ দিনের ব্যবধানে চার টাকা বেশি দামে যে চালটা পাওয়া যাচ্ছে তার ধানের সোর্স তো আগের সোর্সের সঙ্গে একই। অর্থাৎ বাজারের বর্তমান চালের ধানটা আগে কিনে মাড়াই করে বিভিন্ন জায়গায় স্টক করে রাখা। বর্তমানে কস্টিংয়ের কোনো ডিফারেন্সও হওয়ার কথা না। কারণ, ট্রাক ভাড়া, দোকান ভাড়া, কর্মচারি বেতন বাড়েনি। তাহলে ধানের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলে ১৫ দিনের ব্যবধানে আগে ধানের চালের দাম বাড়িয়ে দেওয়া অযৌক্তিক। আর অযৌক্তিক বিষয়ের বিরুদ্ধে আমরা কাজ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঠিক ১৫-২০ দিনের ব্যবধানে একই মোকামের একই ভাউচারে একই চাল ৪ থেকে সাড়ে ৪ টাকা কম-বেশি হচ্ছে। অর্থাৎ ডিসেম্বরের শেষে যে চালটা এসেছে এবং জানুয়ারির ১০-১২ তারিখে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে সেখানে ৪ টাকার ডিফারেন্স ফরিদপুর ও কুষ্টিয়ার আড়ৎ থেকেই হচ্ছে। বরিশালে তেমন কোনো ব্যত্যয় পাওয়া যায়নি। তারা যে দামে চাল কিনছে আর তার ওপর সামান্য লাভ করেই বিক্রি করে দিচ্ছে। তবে এখানে হাজার হাজার চালের বস্তা রয়েছে। জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিদপ্তরের স্থানীয় কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারা যেন তদন্ত করে দেখে আগের কম দামের কেনা চাল স্টক করে বাড়তি দামে বিক্রি করছে কি না। কারণ, স্টকের চাল যদি বাড়তি দামে বিক্রি হয়, সেটাও একটি বড় ঘাপলা।’
ভোক্তার ডিজি বলেন, ‘বরিশাল বা যেসব জায়গায় পাইকারি ও খুচরা চাল বিক্রি হচ্ছে সেখান থেকে তথ্য নিচ্ছি আমরা। আর এখান থেকে তথ্য নিয়ে যে সোর্স থেকে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সেখানে তদন্ত করব। ব্যত্যয় ঘটলে প্রয়োজনে সিলগালা করে দেব, আইনের আওতায় নেব।’
আসন্ন রমজান উপলক্ষে ডাল, চিনি, তেলসহ রমজানের পণ্য নিয়ে যাতে কারসাজি না করতে পারে সেজন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কাজ করছে বলে জানান তিনি। অপরদিকে, বরিশালের পাইকার মার্কেটে পাওয়া খোলা ভোজ্য তেলের অপরিষ্কার ড্রাম দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ভোক্তার ডিজি।
বাজার পরিদর্শন শেষে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আয়োজনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজনের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন এ এইচ এম শফিকুজ্জামান।
