রফিকুল ইসলাম
রাজধানীর খুচরা বাজারে কমতে শুরু করেছে নির্মাণ সামগ্রী রডের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে রডের দাম টনপ্রতি ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বুধবার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রড বিক্রি হয়েছে টনপ্রতি ৭৫ হাজার থেকে ৮১ হাজার ৫০০ টাকায়।
রাষ্ট্র পরিচালিত ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশ (টিসিবি) অনুসারে, ৬০ গ্রেডের রডের দাম এক সপ্তাহে ১.২৪ শতাংশ কমেছে, যেখানে ৪০ গ্রেডের দাম একই সময়ে ১.৯২ শতাংশ কমেছে।
টিসিবি’র তথ্য বলছে, প্রতি টন ৬০ গ্রেডের এমএস রড বা এর চেয়ে ভাল মানের রড টনপ্রতি ৭৭ হাজার ৫০০ থেকে ৮১ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৭৯ হাজার ৫০০ থেকে ৮১ হাজার ৫০০ টাকা ছিল। অন্যদিকে, ৪০ গ্রেডের এমএস রড প্রতি টন ৭৫ হাজার ৫০০ থেকে ৭৭ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ৭৭ হাজার ৫০০ থেকে ৭৮ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়।
যদিও, ৬০ গ্রেডের এমএস রডের দাম এ বছর ২৮.৭৪ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে ৪০ গ্রেডের দাম আগের বছরের তুলনায় ৩৩.০৪ শতাংশ বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে প্রায় শতাধিক রড প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস (বিএসআরএম), বন্দর স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (বিএসআই), আবুল খায়ের স্টিল (একেএস), রহিম স্টিল মিলস (আরএসএম), কবির স্টিল রি-রোলিং মিলস (কেএসআরএম), রতনপুর রিরোলিং মিলস (আরএসআরএম)। ) এবং আনোয়ার ইস্পাত লিমিটেড হল বাজারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, যারা বাজারের ৬০ শতাংশ দেশীয় চাহিদা পূরণ করে।
এছাড়া আরও কয়েকটি কোম্পানি যেমন জিপিএইচ ইস্পাত, কামাল স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিলস (কেএসএম), আরআরএম (রানি রি-রোলিং মিলস লিমিটেড), এইচকেজি স্টিল মিলস লিমিটেড, এসএএস গ্রুপ (শফিউল আলম স্পেশাল স্টিল মিলস লিমিটেড), বিক্রমপুর স্টিল লিমিটেড। এবং এসএসআরএম (শাহরিয়ার স্টিল মিলস লিমিটেড) বাকি ৪০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে বলেও জানান তারা।
দ্য বিজনেস পোস্ট-এর সাথে আলাপকালে পুরান ঢাকার তাঁতী বাজারের মেসার্স নিউ আকবর স্টিল হাউসের স্বত্বাধিকারী আমির হোসেন বলেন, চলতি সপ্তাহে রডের দাম কমতে শুরু করেছে এবং আরও কমতে পারে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে দেশে রডের দাম বেড়েছে। ভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে এবং আমরা আশা করি খুব শীঘ্রই বাজার স্থিতিশীল হবে।
দাম কমার কারণে বিক্রি বেড়েছে বলেও জানান আমির।
কামাল স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিলের স্বত্বাধিকারী মো: শেখ কামাল বলেন, দেশে লোহার খনি না থাকায় বাংলাদেশের রড উৎপাদনকারীদের আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই দামও নির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর।
কামাল বলেন, তারা ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও ইতালিসহ দেশগুলো থেকে কাঁচামাল আমদানি করে।
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সহ-সভাপতি কামাল মাহমুদ বলেছেন, রডের বাজার মূল্য নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশের একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা দরকার।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা যখন-তখন তাদের খুশিমতো দাম নির্ধারণ করেন, এতে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় ক্ষতি হয়। অস্থিতিশীল রডের দামের কারণে আমাদের অনেক প্রকল্প আটকে গেছে।