দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের পর থেকে বাজারে কমেছে ভোজ্য তেল সয়াবিনের সরবরাহ। এমনটাই অভিযোগ করেছেন খুচরা বিক্রেতারা।
বিক্রেতারা বলছেন, ডিলার বা সরবরাহকারীদের কাছে বার বার চেয়েও তেল মিলছে না। যাদের কাছে এখনও আগের স্টক রয়েছে তারা বিক্রি করতে পারছেন। ইতিমধ্যে অনেকের আগের স্টক শেষ হয়ে গেছে। দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়ার পর থেকেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেও জানান তারা।
এদিকে সরবরাহ ঘাটতিতে তেলের দামও বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ৪-৯ টাকা।
রোববার সেগুনবাগিচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের ৭টি দোকানের মধ্যে ২টিতেই সয়াবিন তেল নেই। পাম তেল আগে থেকেই রাখেন না বাজারের বিক্রেতারা।
বাজারের আল্লাহর দান স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. সিফাত বলেন, আমি গত দুই দিন যাবত তেলের অর্ডার দিচ্ছি। কিন্তু তেলের সরবরাহ পাচ্ছি না। আমার কাছে যা ছিল তা বিক্রি শেষ। এখন তেল না দিলে বিক্রি বন্ধ। শুনেছি তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। হয়তো এ কারণেই তেলের সরবরাহ বন্ধ রেখেছেন, নতুন দাম না আসা পর্যন্ত সরবরাহ কম থাকবে।’
ভোজ্য তেলের একটি ব্র্যান্ড কোম্পানির একজন ডিলার দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, কয়েক দিনের মধ্যে দাম বাড়ার আভাস দিয়েছেন রিফাইনাররা। দাম বাড়ার আগে তেলের সরবরাহ কিছুটা কমে। বিশেষ করে বেশি চাহিদা রয়েছে এমন বোতলজাত তেলের সরবরাহ অনেক কমে যায়। এবারও তাই হয়েছে, তেলের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। তবে আমি চেষ্টা করছি কোম্পানির কাছ থেকে তেল এনে যতটা সম্ভব বাজার চাহিদা পূরণ করতে। সব কোম্পানির সব ডিলার হয়তো তা পারছে না। তাই সংকট তৈরি হচ্ছে।’
সরকারি ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) মূল্য তালিকা অনুসারে খুচরা পর্যায়ে রোববার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে প্রতি লিটার ১৬৬-১৭৫ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৬২-১৬৬ টাকা। খোলা সয়াবিন তলের সরকার নির্ধারিত খুচরা মূল্য ১৬৬ টাকা লিটার।
রোববার বোতলজাত তেল বিক্রি হয়েছে প্রতি লিটার ১৮৫-১৯০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে যা ১৮০-১৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরকার বির্ধারিত মূল্য ১৮৫ টাকা লিটার। খোলা পাম সুপার তেল বিক্রি হয়েছে ১৪৫-১৫০ টাকা লিটার, এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ১৪০-১৪৫ টাকা লিটার।
সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ২০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। দাম বাড়ানোর এ প্রস্তাব ৩ আগস্ট বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে (বিটিটিসি) দিয়েছে সংগঠনটি। এতে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা, এক লিটারের বোতল ২০৫ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতল ৯৬০ টাকা করার কথা বলা হয়েছে।
সর্বশেষ গত ২১ জুলাই লিটারপ্রতি দর ১৪ টাকা কমানো হয়।