প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

করোনাকালে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঝুঁকেছে মানুষ

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১১:০৫:০৬ | আপডেট: ৩ years আগে
করোনাকালে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঝুঁকেছে মানুষ

শাহীন হাওলাদার

করোনাকালে প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের বিকল্প হিসেবে এজেন্ট ব্যাংকিংকে বেছে নিয়েছে মানুষ। যে কারণে গ্রাহকের সঙ্গে বেড়েছে আমানতও। ২০২০-২১ অর্থবছরে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানতের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ২০ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২১ অর্থবছরে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আমানত ৯৯.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা আগের অর্থবছরে ছিল ১০ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা।

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো গ্রহকদের বিভিন্ন রকম সেবা দিয়ে থাকে। যেমন, নগদ আমানত, উত্তোলন, রেমিট্যান্স বিতরণ, ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ ও আদায়।

এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের মাধ্যমে ঋণ বিতরণের পরিমাণও ব্যাপক বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ হাজার ১৮৬ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৭২১ কোটি টাকা।

সারাদেশে ২৮টি ব্যাংক ১৭ হাজার ১৪৫টি আউটলেট এবং ১২ হাজার ৯১২টি এজেন্টের মাধ্যমে তাদের এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

২০২১ অর্থবছরে এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ছিল ১.২২ কোটি। যার মাধ্য নারী হিসাবধারীর সংখ্যা ৫৬.৭৫ লাখ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে মানুষ একসঙ্গে জড়ো হওয়া থেকে বিরত থাকতে এজেন্ট আউটলেটকেই বেছে নেয়। সে কারণেই গত অর্থবছরে আমানত দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

অন্যদিকে, ব্যাংকগুলো এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সেবা দিয়ে অনেক মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় নিয়ে এসেছে। এতে এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আমানত দ্রুত বৃদ্ধি পায় বলেও জানান সিরাজুল ইসলাম।

২০২১ সালের জুন পর্যন্ত এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সংগৃহীত মোট আমানতের ৮৭.৩৩ শতাংশই ছিল শীর্ষ ৫টি ব্যাংকের।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ (আইবিবিএল) এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ পরিমাণ আমানত সংগ্রহ করেছে। ব্যাংকটির সংগ্রহের পরিমাণ ৬ হাজার ৮৬১.১১ কোটি টাকা। যা আমানত সংগ্রহের মোট পরিমাণের ৩৩.৬৭ শতাংশ।

ব্যাংক এশিয়ার সংগ্রহ ১৫.১০ শতাংশ। অন্যান্য শীর্ষ তিনটি ব্যাংক হলো- ডাচ-বাংলা ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক এবং অগ্রণী ব্যাংক।

অন্যদিকে, ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিতরণ করা মোট ঋণের ৯৯.২৮ শতাংশই বিতরণ করেছে শীর্ষ ২০ ব্যাংক।

ব্র্যাক ব্যাংক সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ঋণ বিতরণ করেছে। যার পরিমাণ ১ হাজার ৯৯৮.৫৭ কোটি টাকা, এটি মোট বিতরণের ৬২.৭২ শতাংশ।

১৯.৬০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করে পরের অবস্থানেই রয়েছে ব্যাংক এশিয়া। দ্য সিটি ব্যাংক ১০.৯২ শতাংশ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ৩.৪৪ শতাংশ এবং ডাচ- বাংলা ব্যাংক ২.৬০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, শীর্ষ ২০ ব্যাংক তাদের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোট অ্যাকাউন্টের ৯০.৬১ শতাংশই খুলেছে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ৪৩.৭৫ লাখ অ্যাকাউন্ট খুলেছে, যা মোট অ্যাকাউন্টের ৩৫.৮৪ শতাংশ।