প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

কাঁচামরিচের ঝালে নাকাল ক্রেতা

১৪ আগস্ট ২০২১ ২০:৩৯:৫৯ | আপডেট: ৩ years আগে
কাঁচামরিচের ঝালে নাকাল ক্রেতা

আব্দুল্লাহ আল মাসুম

বিধি-নিষেধ উঠে যাওয়ায় স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে রাজধানীর জনজীবন। পুরোদমে খুলেছে শিল্প-কারখানা অফিস-আদালত। এতে রাজধানীতে মানুষের উপস্থিতি বাড়ায় চাপ পড়ছে নিত্যপণ্যের বাজারে। এ কারণে বিধি-নিষেধ পরবর্তী বাজারে হঠাৎ দাম বেড়েছে কাঁচামরিচের।

শুক্রবার রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলোতে দেখা যায় প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায়। সরবরাহ কম থাকায় দামের এমন ঊর্ধ্বগতি বলছেন ব্যবসায়ীরা।

গত সপ্তাহে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। ইতোমধ্যে ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি করার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সঙ্গে অধিকাংশ সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

রাজধানীর রাজাবাজার এলাকার বাসিন্দা সুরুজ মিয়া বলেন, আধা কেজি কাঁচামরিচ ১১০ টাকায় কিনেছি। এতো বেশি দাম হওয়ায় চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'আমি মাত্র দশ দিন আগে প্রতি কেজি ৮০ টাকা দরে ​কাঁচামরিচ কিনেছিলাম কিন্তু এর দাম এখন অনেক বেশি। যেহেতু এটি রান্নার জন্য অপরিহার্য, তাই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও কিনতে হয়।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার কাঁচা বাজারের খুচরা বিক্রেতা করিম উদ্দিন বলেন, বাজারে সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় এখনও দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে নতুন শীতকালীন সবজি শিমের দাম এ মুহূর্তে একটু বেশি।

এছাড়া টমেটো প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকা, শিম ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকার কারওয়ান বাজার, তালতলা, রাজা বাজার এবং শুক্রাবাদ কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শিম ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি চিচিঙ্গার দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, আলুর দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা, গোল বেগুন ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৭০টাকা, লেবুুর হালি ১৫টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৩০টাকা, শসা ৩৫ থেকে ৪০টাকা, লাউ এক পিস ৪০ থেকে ৫০টাকা, ঢেঁড়স ৩৫ থেকে ৪০টাকা, কাঁচা কলার হালি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, কাঁচা পেঁপের কেজি ৩০ টাকা, করলা ৪৫ থেকে ৫০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, এক লিটার সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর দুই লিটার তেলের বোতলের দাম ৩০০ থেকে ৩০৮টাকা এবং ৫ লিটারের তেলের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭২৮ টাকায়।

অন্যদিকে, রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের মাছ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ মাছের দাম আগের মতই আছে। এছাড়া লকডাউনের তুলনায় এখন ভাল বিক্রি হচ্ছে বলেও জানান তারা।

অন্যান্য বাজারের তুলনায় রাজা বাজার ও শুক্রবাদ বাজারে অপেক্ষাকৃত কম দামে বিভিন্ন জাতের মাছ মিলছে।

মাঝারি ধরনের প্রতি কেজি ইলিশ মাছ ৪৫০ থেকে ৮০০টাকা, বড় মাগুর প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০টাকা, বোয়াল মাছ ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, কোরাল মাছ ৫৫০ থেকে ৬০০টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, রুই প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৩৪০টাকা, পাপদা কেজি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা এবং কাতলা মাছের কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১০ টাকা বেড়ে ১১৫ থেকে ১৩৫ টাকায় এবং লেয়ার ও সোনালী মুরগি আগের সপ্তাহের হিসাবে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকায় এবং ৮২০ থেকে ৪৬০ টাকায় খাসির মাংস বিক্রি হয়।

শুক্রাবাদ বাজারের বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, 'লকডাউন তুলে নেওয়ার পর অনেকেই গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরে এসেছেন। তাই ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। এছাড়া হোটেল এবং রেস্তোরাঁর চাহিদা থাকায় দামের ঊর্ধ্বগতি হয়েছে।

বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। কাটারি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, স্বর্ণা চাল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, পাইজাম চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৪ টাকা, বাসমতি চাল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, বিরি-২৮ ও ২৯ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, বাশফুল চাল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, জিরা চাল ৮০ থেকে ৯০ টাকা এবং হাসকি চাল ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া, চিনি ৭২ থেকে ৭৫ টাকায়, বিভিন্ন জাতের মসুর ৮০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ দাম কিছুটা কমে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়, দেশি রসুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা এবং চাইনিজ আদা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা আর দেশি আদা ১৫০ টাকা থেকে কমে ১২০ টাকায় এবং বিদেশী আদা ১৮০ টাকা থেকে কমে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খোলা আটা ৩০ টাকা এবং প্যাকেটজাত আটা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ধরে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।