রাজধানীর বাজারগুলোতে এখনও ঈদের আমেজ রয়েছে। প্রায় ক্রেতা শূন্য চাল-ডাল, মাছ-মাংস, সবজিসহ নিত্যপণ্যের বাজার। তারপরও দামের উত্তাপ কমেনি, আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নতুন করে বেড়েছে আরও কিছু পণ্যের দাম।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বৃহস্পতিবারের তথ্য অনুসারে, এক সপ্তাহে ৪৪টি পণ্যের দামের পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে ২৭টি পণ্যের দাম বেড়েছে। বাকি ১৭টির দাম কমেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের ছুটির কারণে অনেক পণ্যের সরবরাহ কম। তাই দামও কিছুটা বেশি।
বৃহস্পতিবার সেগুনবাগিচা ও গোপীবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারের প্রায় সব ধরনের পণ্যের দোকানই খোলা রয়েছে। বিক্রেতারা বসে আছেন ক্রেতার আশায়। কিন্তু দু-একজন ক্রেতা ছাড়া বাজার প্রায় শুন্য।
তবে কিছু পণ্য আগের বাড়তি দামে বিক্রি হলেও বেড়েছে বেশি কয়েকটি পণ্যের। বাজারে চালের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন নেই। সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৪ থেকে ৮০ টাকা কেজি, মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৬০ টাকা কেজি। মোটা চাল কিনতে লাগছে ৪৮-৫২ টাকা কেজি।
বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম আগের মতো হলেও লিটারে ৫ টাকা বেড়েছে খোলা পাম ওয়েলের দাম। বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৯-২০০ টাকা ও পাম ওয়েল (লুজ) বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৫৫ টাকা লিটার। মশুর ডাল আগের মতোই ১১০-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে মানভেদে। চিনির দামও আগের মতোই ৭৮-৮২ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে সেগুনবাগিচা বাজারের আল্লাহর দান স্টোরের বিক্রেতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঈদের পর এখন মানুষ নিত্যপণ্যের বাজারে খুব একটা আসছে না। টুকটাক কেনাকাটা করতে কিছু মানুষ আসছে কিন্তু তা সংখ্যায় খুবই কম। পণ্যের চাহিদা কম থাকায় আমরাও পাইকারি বাজারে খুব একটা যাচ্ছিনা। ডিলার প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরাও অর্ডার নিতে আসেনি এখনও। আগামী সপ্তাহ থেকে হয়তো বাজার আবার পুরো উদ্যোমে শুরু হবে।
বাজারে সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে ডিমের দাম। দীর্ঘ দিন ধরেই ফার্মের মুরগির ডিম কিনতে হচ্ছে ৪০-৪২ টাকা হালি। ঈদে ডিমের চাহিদা কমলেও দাম আগের মতোই রয়েছে। এছাড়া নতুন করে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ১৫০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারের অধিকাংশ গরুর মাংসের দোকান ছিল বন্ধ। এছাড়া মাছের বাজারও কিছুটা চড়া। কেজিপ্রতি ১০-২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে রুই, কাতলা, চিংড়িসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ। গতসপ্তাহে রুই মাছের কেজি ছিল ২৫০-৩৩০ টাকা কেজি। গতকাল বিক্রি হয়েছে ২৬০-৩৫০ টাকা কেজি। ছোট চিংড়ি গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৬৫০-৭০০ টাকা কেজি। বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ৭০০-৭৫০ টাকা কেজি।
বাজারে চার ধরণের সবজির দাম সেঞ্চুরি করেছে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত বেগুনের কেজি ছিল সর্বোচ্চ ৮০ টাকা। বৃহস্পতিবার সেগুনবাগিচা বাজারে বেগুন বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজি। এছাড়া শশা, গাজর ও কাঁচামরিচের দাম ১০০ টাকার উপরে। আগের সপ্তাহের ৪০-৫০ টাকা দামে স্থির রয়েছে ঢেরস, পটল, দুন্দল, চকুর লতিসহ বেশি কিছু সবজির দাম।
গোপীবাগা বাজারের সবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদের ছুটির কারণে আমদানির গাজর আসছে না বাজারে। এছাড়া দেশীয় কিছু সবজির মৌসুম শেষের পথে। বর্ষার কারণে অনেক সবজির উৎপাদন কম। সবমিলিয়ে সবজির বাজার আরও এক মাস বেশি থাকতে পারে।