প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

জমে উঠেছে মিশ্র শুকনো ফলের বাজার

মুহাম্মদ আইয়ুব আলী
২২ মে ২০২২ ১২:৫৬:৪৯ | আপডেট: ১ year আগে
জমে উঠেছে মিশ্র শুকনো ফলের বাজার

বাজারে বিভিন্ন ধরনের বাদাম, খেজুর ও কিসমিসের সাথে শুকনো ফলের চাহিদা বাড়ছে। এ ধরনের খাবার বেশ স্বাস্থ্যকর হওয়ায় ছোট ছোট প্যাকেটজাত করে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

পুষ্টিবিদদের মতে, বেশিরভাগ শুকনো ফলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং তুলনামূলক বেশি ফাইবার। যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বিশ্ব মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পরে মানুষজন নিজেদের শারীরিক কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খুব বেশি সচেতন হয়ে উঠেছে। ফলে বিভিন্ন ফলের পাশাপাশি শুকনো ফলও ক্রয় করছে। এর ফলে ঘুরে দাঁড়াতে পারছেন ব্যবসায়ীরাও।

এক সময় শুধু মশলার দোকানে বাদাম, চিনাবাদাম, কাজু, পেস্তা, খেজুর, বিভিন্ন ধরনের কিসমিস, সূর্যমুখীর বীজ, কুমড়ার বীজ ও চিয়া বীজ বিক্রি হতো। কিন্তু এখন প্রায় সব ধরনের দোকান, সুপার শপ, ফলের দোকান, মুদি দোকান, এমনকি ওষুধের দোকানেও এ ধরনের মিশ্র শুকনো ফল পাওয়া যায়।

এই ধরনের ফলের পরিচিত পাইকারি বাজার হল- নিউমার্কেট, যাত্রাবাড়ী, কাপ্তান বাজার, মতিঝিল, মিরপুরের শাহ আলী প্লাজা ইত্যাদি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্সের অধ্যাপক শারমিন রুমি আলিম দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, ‘সব ধরনের বাদাম স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। কারণ এতে ভিটামিন-ই থাকে, যা শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।’

যাত্রাবাড়ীর আজিজ স্টোরের মালিক মো. নাজমুল হোসেন বলেন, দিন দিন মিশ্র শুকনো ফলের চাহিদা বাড়ছে। সেই সাথে আমাদেরও ভালো বিক্রি হচ্ছে। প্রতি মাসে প্রায় ৫ লাখ টাকার বেশি বিক্রি করতে পারছি।

একই কথা বলেন নিউমার্কেটের ফল ব্যবসায়ী মো. লিটন। তিনি প্রতিদিন প্রায় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করছেন।

রাজধানীর ফল ব্যবসায়ীর সংখ্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, শহরে কিছু অস্থায়ী ফলের দোকান আছে, যা সরকারি পরিসংখ্যানে নেই। তবে অনুমান করা হচ্ছে প্রায় ৫-৭ হাজার ফলের দোকান রয়েছে, এসব দোকানে প্রায় ১০-১২ হাজার লোকের কর্মসংস্থান রয়েছে।

ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি, শিক্ষার্থীরাও এই ব্যবসায় নেমেছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. হাসান আলী বলেন, গত এক বছর ধরে মতিঝিলে মিশ্র শুকনো ফলের ব্যবসা করি। কাপ্তান বাজার থেকে বিভিন্ন শুকনো ফল কিনে আনি। পরে সেগুলো আধা কেজি সমপরিমাণে মিশিয়ে ৬৫০ থেকে ৭৫০টাকায় বিক্রি করি। এতে প্রতি মাসে প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা আয় হয়।’

শিক্ষার্থী মো. আলনাহিন রসুল অনলাইনে এমন ফল বিক্রি করেন। এতে তার প্রতি মাসে প্রায় ২০ হাজার টাকা আয় হয় বলে জানান তিনি।

মৌলভীবাজার বণিক সমিতি ও বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. এনায়েতুল্লাহ দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, এখন ব্যবসায়ীরা মসলার পাশাপাশি শুকনো ফলও আমদানি করছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পাইকারি দোকান থেকে এসব ফল কিনে;সেগুলোকে মিশিয়ে অস্থায়ী দোকানে বিক্রি করে।

এ ধরনের শুকনো ফল বেশিরভাগ আমদানি করা হয়- ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, ক্রোয়েশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ থেকে।

মতিঝিলে মিশ্র শুকনো ফল কিনতে দেখা যায় মো. সোহেল রানাকে। তিনি দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, নিয়মিত শুকনো ফল খাওয়া হয়। অফিস থেকে বাড়ি ফিরে, বিকেলে এ ধরনের ফল খেতে খুব ভালো লাগে। প্রতি মাসে প্রায় ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকার ফল কেনা হয়।