বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেছেন, নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরের অসহযোগিতা ও সমন্বয়হীনতা। ১২টি অধিদপ্তর আমাদের মনিটরিং করে যাচ্ছে, বছরের পর বছর আমরা বলে আসছি, আমরা ১টি অধিদপ্তরের অধীনে কাজ করতে চাই। কিন্তু এর কোনো লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। বরং উল্টো দিন যত যাচ্ছে প্রত্যেকটা অধিদপ্তর বিক্ষিপ্তভাবে তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপ/ক্ষোভ ঝাড়ছে রেস্তোরাঁ মালিকদের ওপর।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে তিনি এসব কথা বলেন। রেস্তোরাঁর বিষয়ে নেতিবাচক প্রচারণা, মিথ্যা তথ্য প্রদান করলে শাস্তির আওতায় আনার ঘোষনা দেন। প্রচারণা মিথ্যা প্রমাণ হলে আইসিটি আইনে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল কোর্টে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধি রাখা, গ্যাস সংকট দূর করা ও রোজায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ সহ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ছোট ভুলে শাস্তি দেয়া হচ্ছে, কোনো বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞ লোক ছাড়াই যে যেভাবে পারছে জরিমানার নামে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমাদের ব্যবসার সুনাম নষ্ট করছে, এতে আমাদের আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে। এভাবে নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
আমরা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছিলাম, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নিকট আমরা অনুরোধ করেছিলাম আমাদের একটি গ্রহণযোগ্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিউর (এসওপি) দিয়ে গাইডলাইন করুন। এখন পর্যন্ত কোনো সংস্থাই আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো এসওপি দেয়নি।
ইমরান হাসান বলেন, সম্প্রতি রেস্তোরাঁ খাতে কিছু নেতিবাচক প্রচারণায় যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তাই ভোক্তা সমাজকে অনুরোধ করবো রেস্তোরাঁ সেক্টরের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে মন্তব্য করবেন। রেস্তোরাঁর বিষয়ে প্রশাসন, ব্যবসায়ী এবং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানাচ্ছি।
নিত্যপণ্যের দাম দফায় দফায় বাড়ছে, যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে রেস্তোরাঁ খাতে। বাজার নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে রেস্তোরাঁ খাতও বড় সংকটে পড়বে।
পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে হবে। অধিক মুনাফার জন্য কোনোক্রমেই ব্যবসার নৈতিকতা হারানো যাবে না। খোলা জায়গায় স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে খাবার ঢেকে রাখতে হবে।
সমিতির দাবি:
সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মোবাইল কোর্টে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে। হাইকোর্টের অনেক নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অযাচিতভাবে মোবাইল কোর্ট চলছে। আমরা মোবাইল কোর্টের বিরুদ্ধে না, মোবাইল কোর্ট চলুক যৌক্তিকভাবে। জামিন অযোগ্য-কালাকানুন ধারা ও বিধি বাতিল করতে হবে।
তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ থেকে যে গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছি তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। অর্থাৎ পূর্বের তুলনায় গ্যাস পাচ্ছি ১০০ শতাংশের মধ্যে ৪০ শতাংশ মাত্র, কিন্তু বিল আসছে দ্বিগুণ। এদিকে এলপিজি গ্যাসের দামও চড়া, তাই লাকড়ি দিয়ে রান্না করায় কিচেনের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং তা ব্যয়সাপেক্ষ।
প্রতি বছরই মাহে রমজান সমাগত হলে বিভিন্ন মৌসুমি-ফড়িয়া/ ব্যবসায়ীরা ইফতারের নামে ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসেন। এদের হাইজেনিক-নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই, এ বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরি।