প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

পুঁজিবাজারের জন্য বাজেটে ভালো মন্দ কিছু নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
০২ জুন ২০২৩ ১১:০০:০৯ | আপডেট: ২ years আগে
পুঁজিবাজারের জন্য বাজেটে ভালো মন্দ কিছু নেই

পুঁজিবাজারের জন্য কোনো সুখবর নেই আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে। গতিহীন পুঁজিবাজারে গতি ফেরার জন্য বাজেটে কিছু ব্যবস্থা রাখা হতে পারে-এমন আশা করেছিলেন বিনিয়োগকারী ও স্টেকহোল্ডাররা।

বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য রেকর্ড ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় পুঁজিবাজার সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করেন নি। তিনি বিভিন্ন ধরনের যে কর কাঠামোর প্রস্তাব করেছেন, তাতেও পুঁজিবাজারের জন্য কোনো ছাড় রাখা হয়নি।

স্টেকহোল্ডাররা নতুন বাজেটে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার পাশাপাশি ভালো প্রতিষ্ঠানকে বাজারে আনার জন্য কিছু দাবি তুললেও প্রস্তাবিত বাজেটে তাদের বেশিরভাগ দাবি আমলে নেয়া হয়নি।

বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন বাজেটে স্টক এক্সচেঞ্জ, ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকার, তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং বিনিয়োগকারীদের চাওয়া পূরন হয়নি।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বাজারকে ভালো করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া সত্ত্বেও মার্চ মাসজুড়ে বাজারটি অস্থিতিশীল ছিল।

গতকাল সন্ধ্যায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের পুঁজিবাজার পুরোপুরি উপেক্ষিত হয়েছে বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন।

অর্থমন্ত্রী বৃহস্পতিবার তার বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন সরকার আগামী ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য সমস্ত সেক্টরের জন্য কর্পোরেট করের হার অপরিবর্তিত রাখতে চায়।

বর্তমানে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি যাদের পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়েছে তাদের করহার আগের অর্থবছরের মতো ২০ শতাংশ বলবৎ রাখা হয়েছে।

কিন্তু যাদের পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের কম শেয়ার প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এ হার ২২.৫০ শতাংশ।

এর আগে, ২০২০-২১ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার কর্পোরেট কর হার কমিয়েছিল।

এর আগে,স্টক মার্কেট স্টেকহোল্ডাররা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তর ব্যঅপারে যেন ভালো কোম্পানিগুলো আগ্রহী হয় সেজন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আসন্ন জাতীয় বাজেটে তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলির মধ্যে কর্পোরেট করের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ব্যবধানের সুপারিশ করেছিলেন।

বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, ভালো সুযোগ-সুবিধা ছাড়া ভালো কোম্পানি আসবে না; এটা স্বাভাবিক. পুঁজিবাজারে তাদের কিছু আর্থিক নিয়ম মেনে চলতে হয়। ফলস্বরূপ, নির্দিষ্ট সুযোগ না দেওয়া পর্যন্ত তারা তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হবেন না।

বিএমবিএ সভাপতি আরও বলেন, “এটি প্রস্তাবিত বাজেট। চূড়ান্ত বাজেট না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তারপর সবকিছু চূড়ান্তভাবে বলা যাবে।”

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিমের মতে, অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ কিছু নেই।

এ ব্যাপারে মিডউয়ে সিকিউরিটিজ লিমিটেড এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আশিকুর রহমান দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, বিনিয়োগকারী এমনকি তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য এবারের বাজেটে ইতিবাচক কিছু নেই। বাজেটে পুঁজিাবাজারের তারল্য বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া হয়নি।

এটা দুর্ভাগ্যজনক যে ২০২৩ সালেও পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক কিছু দেখা যাচ্ছে না। একটি ভালো পুঁজিবাজার সরকারের ট্যাক্স বাড়াতে সাহায্য করত।

তিনি আরও বলেন, আমি আশা করি আগামী বছর নীতিনির্ধারকরা আরও ভালো সিদ্ধান্ত নেবেন এবং পুঁজিবাজারকে আমাদের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত করবেন।

ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, “প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো উল্লেখযোগ্যকিছু দেয়া হয়নি। হয়নি। তবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উপর বাজেটে কর রেয়াত সুবিধা অপরিবর্তিত রয়েছে। এটা আমাদের জন্য একটা ভালো খবর।”

বর্তমানে, করদাতারা স্টক মার্কেট, ডিপোজিট পেনশন স্কিম, জীবন বীমা, ইত্যাদিতে তাদের করযোগ্য আয়ের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত তাদের বিনিয়োগের উপর ১৫ শতাংশ ছাড় পাচ্ছেন।