চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অন্তত ১৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বরাদ্দ কমেছে।
বৃহস্পতিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ কমেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের। প্রস্তাবিত বাজেটে ৫ হাজার ৩১০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। যেটা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৭৩৭ কোটি টাকা কম। চলতি অর্থবছরে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬ হাজার ৪৭ কোটি টাকা।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ কমেছে ৫৯১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ৬ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের জন্য ৬ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ কমেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের। ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ২ হাজার ৫৪৯ কোটি বরাদ্দ পেয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, যেটা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৫৯১ কোটি টাকা কম। চলতি অর্থবছরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ১৪০ কোটি টাকা।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের বরাদ্দ কমেছে ৪৪৪ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা বিভাগের বরাদ্দও কমেছে প্রস্তাবিত বাজেটে। ১১৫ কোটি টাকা কমিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে পরিকল্পনা বিভাগের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৩৩ কোটি টাকা। চলতি বাজেটে তাদের জন্য বরাদ্দ ছিল ২৪৮ কোটি টাকা।
চলতি বাজেটের চেয়ে ৫৩ কোটি টাকা কম বরাদ্দ পেয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ১৮২ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ বরাদ্দ পেয়েছে ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। যেটা ২০২০-২১ অর্থবছরের চেয়ে ৫০ কোটি টাকা কম। চলমান বাজেটে সুরক্ষা সেবা বিভাগের বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য ১ হাজার ৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। প্রস্তাবিত এই বরাদ্দ চলতি বছরের চেয়ে ৩১ কোটি টাকা কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৩৯ কোটি টাকা।
২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ কমেছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের। শিল্প মন্ত্রণালয়ের জন্য ১ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। আগে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ কমেছে ২৫ কোটি টাকা। চলমান অর্থবছরে এ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ২২১ কোটি টাকা।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। এই বরাদ্দ চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৩৫৯ কোটি টাকা কম। ২০২০-২১ অর্থবছরের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ৬৯২ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৭১২ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ কমছে ২২ কোটি টাকা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বরাদ্দ কমেছে ১৯ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে তাদের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ২৩৯ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে তাদের বরাদ্দ ছিল ২৫৮ কোটি টাকা।
২০২০-২১ অর্থবছরের চেয়ে ৪ কোটি টাকা কমিয়ে ৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের জন্য। চলমান বাজেটে তাদের বরাদ্দ ছিল ৪০ কোটি টাকা।
সরকারের ১৪টি বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের ব্যয় কমলেও ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যয় বেড়েছে ৩৫ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের চলমান বাজেটের চেয়ে ৫০তম বাজেটে প্রায় ৬ শতাংশ ব্যয় বাড়ছে।