প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

প্রায় ৭০০ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশের সম্ভাবনা বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:২৯:১০ | আপডেট: ৩ years আগে
প্রায় ৭০০ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশের সম্ভাবনা বাংলাদেশের

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বানিজ্যিক শহর দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক ট্রেড সেন্টারে কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের জন্য বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম মেলা 'গালফ ফুড' শেষ হচ্ছে আজ।

রোববার থেকে শুরু পাঁচদিন ব্যাপী এ মেলার মূল আকর্ষণ ছিল বিশ্বের ১৮৫টি দেশের বাহারি সব কৃষি পণ্যের প্রদর্শনী।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে আসায় বেশ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল বিদেশি ক্রেতাদের। ফলে এ বছর ৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি আদেশ পেতে পারে বাংলাদেশ। যা বাংলাদেশি টাকায় ৬৮০ কোটি টাকার বেশি।

গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও মেলায় প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে ৪৮টি বাংলাদেশি কোম্পানি। এরমধ্যে রয়েছে - মেঘনা গ্রুপ, আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, অভিজাত ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, এজি এগ্রো ফুড, আহমেদ ফুড, আলিন ফুড, আমিন স্কয়ার, আরিফ এগ্রো, বনফুল, বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, বম্বে সুইটস, সিটি গ্রুপ, ডেনিস ফুড, ইউরেশিয়া ফুড, গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস, হক গ্রুপ, সজিব গ্রুপ, হিফস এগ্রো ফুড, কাজী ফার্মস, মাই ফুডস, প্যাসিফিক কনজুমার, রংপুর ডেইরি ফুড, সিয়াম এগ্রো ফুড, স্টার লাইন, ওয়েল ফুড এবং জিসান ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড।

আগের বছরের তুলনায় এ বছর অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ 'গালফ ফুড' মেলায় এ অংশগ্রহণ ছিল ৪২টি কোম্পানির। সেখানে ২০২২ এ ৪৮টি কোম্পানি স্থান পেয়েছে পারস্যের এই বৃহত্তম খাদ্য মেলায়। স্টলগুলোতে বাংলাদেশি পণ্যের প্রদর্শনীতে কাজ করছেন দেড় শতাধিক প্রতিনিধি।

মেলায় অংশ নেয়া প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হেড অব ইন্টারন্যাশনাল আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, "গত ২০ বছর যাবত আমাদের কোম্পানি এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করে আসছে। সর্বশেষ ২০২০ সালের আয়োজনও বেশ জমকালো ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে গত বছর তেমন সাড়া মেলেনি। এবার তুলনামূলক ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। দর্শনার্থীর চেয়ে ক্রেতার আনাগোনা বেশি থাকায় অনেক অর্ডার পাওয়া গেছে। আশা করছি, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের ব্যবসা আরও সমাদৃত হবে। আমরা আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবো।"

'গালফ ফুড' ফেয়ারের বাংলাদেশি প্যাভিলিয়ন ডিরেক্টর আবু মোখলেছ আলমগীর হোসেন বলেন, এ মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ তাদের বর্তমান বাজার সুসংহত করার পাশাপাশি নতুন বাজার অন্বেষণের প্রচেষ্টা গ্রহণ করে থাকে। প্রতি বছরি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ব্যবস্থাপনায় প্রায় ৫০টি কোম্পানি নিয়মিত ভাবে এ আন্তর্জাতিক ট্রেড ফেয়ারে অংশগ্রহণ করে। প্রতি বছরই রপ্তানি আদেশ প্রাপ্তির সফলতার মুকুটে নতুন নতুন পালক যুক্ত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে এ মেলার গুরুত্ব অপরিসীম।

দুবাইস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর কামরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দুবাইতে এ মেলার আয়োজন করা হয়। এ মেলাতে বিশ্বের অনেক বড় বড় দেশ অংগগ্রহণ করে থাকে। যার সবচাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) ডিলিংস। এখান থেকে ক্রয় আদেশ পাওয়া ও পুরাতন ক্রেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করার একটা বড় জায়গা 'গালফ ফুড' ফেয়ার বা এ খাদ্য মেলা। এবছরও বিশ্বের ১৪৮টি দেশের সঙ্গে ৩০টি স্টল নিয়ে বাংলাদেশি ৪৮টি কোম্পানি এতে অংশগ্রহণ করেছে৷ গত বছর কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার অনেক ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। আমরা চেষ্টা করছি এই মেলাতে আরও বড় পরিসরে অংশ নেয়ার। ইতোমধ্যে নতুন নতুন আরও অনেক কোম্পানি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এছাড়াও যারা বহিঃবিশ্বের বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা গড়ে তুলতে চান তারাও এ মেলা পরিদর্শনে আসতে পারেন।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এ মেলার শুভ উদ্বোধন করেন দুবাই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের চেয়ারম্যান শেখ আহমেদ বিন সাদ আল মাখতুম।