প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

ফলপ্রেমীদের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে আরবীয় সাম্মাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৭ মে ২০২১ ১৩:১৯:২৪ | আপডেট: ৪ years আগে
ফলপ্রেমীদের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে আরবীয় সাম্মাম

সম্প্রতি স্থানীয় বাজারে একটি নতুন ফল পাওয়া যাচ্ছে। রকমেলুন বা ক্যান্টলাপ নামে পরিচিতি পেয়েছে ফলটি। সৌদি আরবে এটি সাম্মাম নামে পরিচিত। বাংলাদেশের ফলপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে নতুন এ ফল।

সৌদি আরবের ফলটি গত বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশে হাতে গোনা কয়েকজন কৃষক চাষ করতে শুরু করেছিলেন। গ্রীষ্মকালীন উত্তাপ থেকে প্রশান্তি দিতে এই রসালো ফলটির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

রকমেলন একধরনের লতানো গাছ থেকে হয়। যেখানে প্রতিটি লতায় দুটি থেকে তিনটি করে ফল থাকে। খেতে সুমিষ্ট গোলাকার ফলটি সবুজ ও হলদেটে রংয়ের হয়।

ঝিনাইদহের রকমেলন চাষী আবির শিকদার বলেন; তিনিই প্রথম রকমেলনের চাষ করেছেন। স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে এর চারা সংগ্রহ করেছিলেন। এরপর ১ বিঘা জমিতে চাষ করেছিলেন এই ফলের। 

৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন এর পেছনে। ফলের চারা বপনের পর এটি নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন তিনি। কিন্তু মুনাফা লাভের পর তার স্বপ্ন পূরণ হয়।

আবির এর ভাষায়: ‘দুই মাস পর আমি আমি বীজ বপনের ফলাফল দেখতে পাই। এরপর গাছগুলোতে যখন ফল ধরে তখন আমি সেগুলো ঢাকাতে এবং আমাদের স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করি। প্রথমবারেই আমি আড়াই লাখ টাকা লাভ করি।’ 

আবির জানান, ফলগুলো তিনি ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন।

ঝিনাদহের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ আজগর আলী বলেন:  যদিও রকমেলন নামের ফলটি এখনো তেমনভাবে পরিচিতি পায়নি। তবে ফলটি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এটি শুধু গ্রীষ্মকালেই নয় শীতকালেও পাওয়া যাচ্ছে। ফলটি সম্পর্কে তারা স্থানীয় কৃষকদের উৎসাহিত করছেন।

তিনি বলেন: ‘আমরা চেষ্টা করছি স্থানীয়দের ফলটি সম্পর্কে উৎসাহিত করতে। এ লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন মেলাগুলোতে ফলটির প্রদর্শনী করার চেষ্টা করছি।’ 

ফলটির বীজ সম্ভবত থাইল্যাল্ড থেকে আমদানি করা হয়েছিলো। কিন্তু তারা এটি সংগ্রহ করেছেন ‘লাল ট্রি সীড’ লিমিটেড এর কাছ থেকে। 

চুয়াডাঙ্গা জেলার আরেক সাম্মাম চাষী মোহাম্মদ সামিউল্লাহ জানান; তিনি সৌদি আরবে থাকাকালে এই সাম্মাম ফলটি সম্পর্কে অবগত হন। সেখানে খুব জনপ্রিয় সাম্মাম ফল। সৌদি আরব থেকে ফেরার প রতিনি তার এলাকায় এই ফলটি চাষের সিদ্ধান্ত নেন। 

সামিউল্লাহ’র ভাষায়: ‘আমি সৌদি আরব থেকে সাম্মামের বীজ নিয়ে আসি। আমি দুই বিঘা জমিতে এর চাষ করি। সেই বাবদ আবার ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিলো। নতুন ফল কতোটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে এ নিয়ে আমি খুব চিন্তিত ছিলাম। ১ থেকে দেড় কেজি ওজনের ফলগুলো আমি বিক্রি করেছি প্রতি পিস ১৫০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা দরে। ’

আমার কাছে এখনো অনেক সাম্মাম ফল আছে এবং আমি সেগুলোকে ১ লাখের বেশি টাকায় বিক্রি করতে পারবো।

তিনি যোগ করেন: রমজানে আমাদের এলাকায় এই ফলটির অনেক চাহিদা ছিলো। আমি আশা করছি লকডাউন চলে গেলে আমি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে প্রতি কেজি ফল বিক্রি করতে পারবো। 

মোঃ সুরুজ আলী নামে কারওয়ান বাজারের পাইকারি ফল বিক্রেতা বিজনেস পোস্টকে বলেন: আমি এই ফলটি প্রথমবারের মত বিক্রি করছি এবং অনেক বেশি সাড়া পাচ্ছি। সবাই ফলটি অনেক পছন্দ করছে। কিন্তু এই ফলটি এখনেসা বাজারে সহজলভ্য নয়। এবং বেশিরভাগ মানুষই এই ফলটি সম্পর্কে এবং এর স্বাদ সম্পর্কে অবগত নন।

তিনি আরও জানান: প্রতি কেজি সাম্মাম ফল তিনি ১৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। 

মো: জাওয়াদ নামে কারওয়ান বাজারের এক ক্রেতা জানান: ফলটি খুবই সুস্বাদু। আমি এটি প্রথম কিনেছিলাম রমজান মাসে। আজ আমি এটি দ্বিতীয়বারের মত কিনলাম। এটা বাংলাদেশে একটি অপরিচিত ফল।