প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

ফের ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
২২ মে ২০২২ ০৯:৫৫:২০ | আপডেট: ৩ years আগে
ফের ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ আবারও ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। এর আগে বড় আমদানি ব্যয় পরিশোধের কারণে রিজার্ভের পরিমাণ কমে গিয়েছিল। তবে ছয় কার্যদিবসের মধ্যে আবার সেটি ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।

গত ১০ মে আমদানি ব্যয় হিসেবে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ২ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করায় রিজার্ভ সেদিনের স্থিতি ছিল ৪১ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। তবে ছয় কার্যদিবসের মধ্যে আরও ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার যোগ হওয়ায় ফের ৪২ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ।

রিজার্ভ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্য বলছে, আকুর দেনা পরিশোধ এবং আরও কিছু অর্থ লেনদেনের পর ৪২ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে। এর আগে গত ৩০ এপ্রিল রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৪ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে দেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এসেছে ৮৩ কোটি ৬১ লাখ ডলার। দৈনিক গড় প্রবাহ বিবেচনায় প্রবাসী আয়ের এ ধারা আগের মাস এপ্রিলের চেয়ে বেশি।

২০২১ সালের আগস্টে রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ছাড়িয়েছিল বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ। টাকার বিপরীতে ডলারের দামের ঊর্ধ্বমুখী ধারা এবং চাহিদার তুলনায় সরবরাহ সংকটের মধ্যে গত ১০ মে আকুর দায় পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসার দিনই টাকার মান ২৫ পয়সা কমানো হয়। পরে আরেক দফায় আরও ৮০ পয়সা কমিয়ে প্রতি ডলারের বিপরীতে বিনিময় হার আন্তঃব্যাংকে নির্ধারণ করা হয় ৮৭ টাকা ৫০ পয়সায়। তবে খোলাবাজারে ডলারের বিনিময় হার উঠেছিল ১০২ টাকায়।

এরপর আরও একদফা টাকার অবমূল্যায়ন করা হয়। গত ১৬ মে টাকার মান আরও ৮০ পয়সা কমিয়ে প্রতি ডলারের বিপরীতে বিনিময় হার আন্তঃব্যাংকে নির্ধারণ করা হয় ৮৭ টাকা ৫০ পয়সায়।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৬ হাজার ১৫২ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। প্রতি মাসে গড়ে ৬ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে আমদানিতে। এ হিসাবে বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে ছয় মাসের বেশি সময়ের আমদানি বিল পরিশোধ করতে পারবে বাংলাদেশ।

বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়তে থাকায় আমদানিকারকদের বেশি ডলার গুনতে হয়। এতে করে দেশের ডলারের চাহিদা বাড়তে থাকে। এর প্রভাব দেখা যায় নগদ ডলারে কেনাবেচায়। ফলে ব্যাংকের পাশাপাশি ডলারের সরবরাহ সংকট দেখা দেয় খোলা বাজারেও। গত ১৭ মে খোলাবাজারে ডলারের বিনিময় হার উঠেছিল ১০২ টাকায়। সরবরাহ বাড়ায় পরের দিন অবশ্য কিছুটা কমে ৯৭ টাকায় লেনদেন হয়।

রেমিটেন্স সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেকটি প্রতিবেদন বলছে, অর্থনীতির ওপর কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাব থাকা স্বত্বেও প্রবাসীদের রেমিটেন্স পাঠানোর ধারা ইতিবাচক রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, ১২ মে পর্যন্ত গড় হিসাবে দৈনিক রেমিটেন্স এসেছে ৬৯ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন ডলার। গত এপ্রিলে দৈনিক গড় রেমিটেন্স প্রবাহ ছিল ৬৬ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমায় প্রবাসীরা আগের চেয়ে বেশি অর্থ পাচ্ছেন বলে রেমিট্যান্সও বেশি পাঠাচ্ছেন। আবার আসন্ন কোরবানির ঈদের প্রভাবও থাকতে পারে। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্সের ধারা আরও বেগবান হবে।