ফ্লোর প্রাইস দিয়েও আস্থার সংকট কাটানো যাচ্ছে না পুঁজিাবজারে। দরপতন ঠেকাতে এ বছরের ২৮ জুলাই দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারদর কমার সর্বনিম্ন সীমা) আরোপ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরপর থেকে পুঁজিাবাজারের লেনদেনে ধারাবাহিক পতন চলছে।
সোমবার ঢাকা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩৫১ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। রোববার ডিএসইতে ৪২২ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন ৬০৪ কোটি ৩৬ হাজার ৮০১ টাকা হলেও এর আগের সপ্তাহে তা ছিল গড়ে ১ হাজার ১৬৪ কোটি ৪৬ লাখ ১৫ হাজার ২৩৭ টাকার।
অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেনে কমেছে ৪৮.১৩ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, ডলার সংকট এবং ফ্লোর প্রাইস ওঠে যাওয়ার গুজব পুঁজিবাজারের বর্তমান মন্দাবস্থার মূল কারণ হিসেবে মনে করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে বড় বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। তারা তাদের বিনিয়োগ আটকে যাবার ভয়ে আছেন।
পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আবু আহমেদ দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে দেশের পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগকারী নেই। এর কারণে কৃত্রিমভাবে মার্কেট কারেকশনটাকে থামিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমি তিন মাস আগেই বলেছিলাম ফ্লোর প্রাইসের কারণে লেনদেন কমে যাবে। যার ফলাফল আজকের বাজারে দৃশ্যমান।
এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য ব্রোকারেজ হাউসের মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী।
আহমেদ রশিদ দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, বাজারে ফ্লোর প্রাইস ওঠে যাওয়ার গুজব,দেশের অর্থনৈতিক মন্দাবস্থা এবং দেশের বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার অপ্রতুলতার ফলে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে পুঁজিবাজারে। তিনি আরো বলেন এ মূহুর্তে ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, কমিশনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। বাজার পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন বর্তমান বাজারে যে তারল্য সংকট চলছে তা নিরসনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসা উচিত।