পুঁজিবাজারে গতিশীলতা বাড়ানোর জন্য আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে শর্তসাপেক্ষে তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয়করের হার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সাথে এ হারের খুব বেশি হেরফের হয়নি। এ প্রস্তাব কার্যকর হলে তালিকাভুক্ত এবং অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করহারের পার্থক্য থাকবে মাত্র ৭ .৫০ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটে কর কমানোর এই প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
প্রস্তাব অনুসারে, তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানি তার পরিশোধিত মূলধনের কমপক্ষে ১০ শতাংশ পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করেছে সেসব কোম্পানিকে ২০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। বর্তমানে এই করের হার ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ। কোনো কোম্পানি ন্যূনতম ১০ শতাংশ শেয়ার ইস্যুর শর্ত পরিপালনে ব্যর্থ হলে ওই কোম্পানিকে বর্তমান হারে অর্থাৎ ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ কর দিতে হবে।
তাছাড়া তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানি তাদের মোট ইস্যুকৃত শেয়ারের ১০ শতাংশের কম প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজারে ছেড়েছে সেসব কোম্পানিকে আগামী অর্থবছরেও ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। আর শর্ত পরিপালনে ব্যর্থ হলে ২৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
পুঁজিাবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির ক্ষেত্রেও এই হার কমানো হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান করহার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৭.৫০ শতাংশ করা হয়েছে।
অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ব্যাংক বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর করহার ৪০ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এই হার ৩৭.৫০ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত ব্যাংক বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে করহারের পার্থক্য মাত্র ২.৫০ শতাংশ।
এ ব্যাপারে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ দ্য বিজনেজ পোস্টকে বলেন, এই বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কোন সুখবর নেই।
তিনি মনে করেন, তালিকাভুক্ত এবং অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করহারের পার্থক্য তেমন একটা বাড়ানো হয়নি। তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে করছাড়ের ক্ষেত্র আরো বড় করলে বাজারে ভালো কোম্পানিগুলো লিস্টেড হতো, বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হতেন। এছাড়া ডিভিডেন্ডের আয়ে করমুক্ত সীমাও বাড়ানো হয়নি যা অনেকদিনের দাবি ছিল।
তিনি আরো বলেন, সরকারের উপরমহলে পুঁজিবাজার নিয়ে অনেক কথা বলা হয় কিন্তু এ বাজারের উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করা হয় না।
এ ব্যাপারে মিডওয়ে সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহম্মদ আশিকুর রহমান দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, বাজেটে এক্সর্পোট ওরিয়েন্টেড কোম্পানিগুলোর জন্য সুখবর থাকলেও পুঁজিবাজারের জন্য তেমন একটা ভালো খবর নেই। তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে ন্যূনতম করছাড় ভালো কোন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী করবে না। লভ্যাংশের ওপর কর পরিহারের দাবিও পূরণ হয়নি এ বাজেটে।
তিনি আরো বলেন, সরকারের উপরমহলে পুঁজিবাজার নিয়ে সারাবছর অনেক কথা হলেও বাজেটে এ বাজার নিয়ে তেমন ভালো কোন খবর থাকে না।
আশিকুর রহমানের মতে, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কাজ করার মতো দেশে দক্ষ লোকের অভাব রয়েছে।