বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং প্রবাসীদের জন্য বিদেশে বাংলাদেশি মিশনের সেবার মান বাড়াতে মিশনপ্রধানদের বলিষ্ঠ ভূমিকা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
এ সময় দুর্নীতির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি সম্পর্কে মিশনপ্রধানদের সতর্ক করেন এবং সংশ্লিষ্ট মিশন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট করতে পারে এমন কোনো ঘটনা এড়াতে তাদের পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির প্রতি জিরো টলারেন্সের বিষয়ে আপনারা সবাই জানেন। বিদেশে আমাদের সুনাম নষ্ট করে এমন কিছু, মিশনে আমি চাই না। আমরা এমন কিছু শুনতে চাই না। এ বিষয়ে আপনারা সতর্ক থাকবেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সভায় এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমও এ সভায় যোগ দেন।
এ সময় ড. মোমেন বলেন, সেবার মান, বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রবাহ ও অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নেয়া লাগবেই।
বিদেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের তিনি বলেন, ‘আমাদের এটি করার জন্য উদ্ভাবনী উপায় খুঁজে বের করতে হবে। আপনি যদি এটি করতে পারেন, এটি আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। এটি আমি আপনাদের কাছ থেকে আশা করব।’
বিদেশে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঘন ঘন মতবিনিয়ম করতে রাষ্ট্রদূতদের পরামর্শ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতি ১৫ দিনে অন্তত একবার। প্রযুক্তি ভিত্তিক সেবা সম্পর্কে জানতে তাদের সহযোগিতা করতেও বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সমন্বয় বজায় রেখে আমি বিদেশে আমাদের প্রতিটি মিশনকে একটি দল হিসেবে কাজ করতে দেখতে চাই। আমাদের একটি ইউনিট হিসেবে কাজ করতে হবে।’
আব্দুল মোমেন বলেন, তিনি সময়ে সময়ে কিছু ছোট অভিযোগ পান। তবে মিশন সে গুলো সমাধানের সহজ উপায় খুঁজে বের করতে পারে। ‘আমরা দেখতে চাই যে কাজগুলো অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে করা হয়।’
জনগণ তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিক যেন পান এ জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিটি মিশনে একটি করে কার্যকরী হটলাইনের প্রয়োজন অনুভব করেন এবং এ সেবা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, বিদেশে বাংলাদেশি মিশনগুলোকে নতুন নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করতে হবে এবং সেখানে বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
এ ধরনের প্রচেষ্টায় শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্স বৃদ্ধি পাবে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, আমরা যদি আমাদের শ্রমশক্তিকে আরও দক্ষ করতে পারি এবং তাদের বিদেশে পাঠাতে পারি তাহলে কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না।
বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যে নিয়োজিত রয়েছেন। এ জন্য শ্রমবাজারে বৈচিত্র্য আনার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন মন্ত্রী।
সম্প্রতি রোমানিয়ায় লোক নেয়ার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য দেশে জনশক্তি পাঠাতে তাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে।
আফ্রিকার দেশগুলোতে কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে শ্রমিক পাঠাতে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতেও বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।