প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি আমদানিতে বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন বাংলাদেশের: সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক
২২ জুন ২০২৩ ২১:৫০:৩২ | আপডেট: ২ years আগে
বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি আমদানিতে বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন বাংলাদেশের: সিপিডি

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে, বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য প্রাথমিক জ্বালানি আমদানি করতে বাংলাদেশকে বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হবে।

বৃহস্পতিবার একটি সেমিনারে এই তথ্য জানায় সংস্থাটি। থিঙ্ক ট্যাঙ্ক বলেছে, প্রতি মাসে ৮৩৩ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।

সেমিনারে বক্তব্যে বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘সরকার আমদানি-নির্ভর জ্বালানি নীতি অনুসরণ করায় ২০২৫ সালে এই ব্যয় ২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।’

সিপিডি রাজধানীর একটি হোটেলে ‘জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে চ্যালেঞ্জ: প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট কি সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে? শিরোনামে একটি সেমিনারের আয়োজন করে।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ডক্টর খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এই বিষয়ে একটি উপস্থাপনা করতে গিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ‘সরকারের আমদানিনির্ভর ভুল নীতির’ কারণে চলমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট আগামী দিনে আরও ঘনীভূত হবে।

তিনি বলেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও সে লক্ষ্য অর্জনে কোনো বিশ্বাসযোগ্য কর্মসূচি নেই।

তিনি আরও বলেন, বরং এখন লক্ষ্য পরিবর্তন করে বলা হয়েছে যে ২০৪১ সালের মধ্যে ক্লিন এনার্জি থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম; ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রকৌশল অনুষদের (এফই)ডিন প্রফেসর ড. এম শামসুল আলম; ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর খসরু মো. সেলিম।

মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের তীব্র সংকটে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

‘মূল্য বৃদ্ধি সত্ত্বেও, শিল্পগুলোকে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ ঘন্টা লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডলার সংকটের মূল সমস্যা যার জন্য প্রাথমিক জ্বালানি যেমন এলএনজি, ফার্নেস অয়েল এবং কয়লা আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি বলেন, নীতিনির্ধারকরা কয়লা ও গ্যাসের মতো দেশীয় উৎস থেকে প্রাথমিক জ্বালানি উৎপাদনের দিকে নজর দেননি।

অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, একজন আন্তর্জাতিক পরামর্শক বিদ্যমান ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করেছেন। কিন্তু সরকার সেই সুপারিশকে পুরোপুরি উপেক্ষা করে এবং জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় এলএনজি আমদানিতে চলে যায়।

প্রফেসর ইজাজ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের উচিত বছরে অন্তত ২৫টি কূপ খনন করা যেখানে এটি একটির কম খনন করছে।

অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, জ্বালানি খাতে জরুরি তহবিল সহায়তা দিতে সরকারকে মূল্য স্থিতিশীলতা তহবিল গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা হয়নি।

বরং নিয়ম লঙ্ঘন করে গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের অর্থ অবৈধভাবে এলএনজি আমদানিতে ব্যবহার করেছে বলে জানান তিনি।